সুন্দরবন: গবেষণায় ২০ কোটি টাকা দেবে অস্ট্রেলিয়া

সুন্দরবন নিয়ে গবেষণায় ২০ কোটি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে একটি অস্ট্রেলিয়ান সংস্থা। সুন্দরবন নিয়ে যৌথ ও সমন্বিত গবেষণার উদ্যোগ এবং অস্ট্রেলিয়ান গবেষণা সংস্থার সহায়তা বিষয়ক এক সেমিনারে এ আশ্বাস দেওয়া হয়। রবিবার (৯ অক্টোবর) সকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সুন্দরবন

সেমিনারে উপস্থাপিত বিভিন্ন গবেষণা নিবন্ধ ও আলোচনায় উঠে আসে বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, লবণাক্ততা বৃদ্ধিসহ নানামুখী বৈরী অভিঘাত সত্ত্বেও সুন্দরবন আপন মহিমায় টিকে আছে। এর আয়তনও বাড়ছে। তবে গত ৫০-৬০ বছর বা ততোধিক সময়ের তথ্য-উপাত্ত বলছে- সুন্দরবনের কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন দৃশ্যমান। লবণাক্ততা বৃদ্ধি সত্ত্বেও কোনো কোনো প্রজাতির (গেওয়া, গরানসহ) বৃক্ষ-গুল্মের বৃদ্ধির প্রবণতা আশাব্যঞ্জক অবস্থায় রয়েছে। আবার কোনো কোনো প্রজাতির (সুন্দরীসহ) ওপর অনেকটা বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকারসহ নির্বিচারে সন্নিহিত এলাকার নদী ও খালে চিংড়ির পোনা আহরণে মৎস্য প্রজনন, বিস্তার ও বংশ রক্ষায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচার রিসার্চ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সুন্দরবন বন বিভাগ, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৎস্য বিভাগ, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, জিআইজেডসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সুন্দরবন নিয়ে স্ব স্ব ক্ষেত্রে গবেষণা, কার্যক্রম বাস্তবায়ন, উদ্যোগ ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এ আলোচনায় সুন্দরবনের ওপর বৃষ্টিপাত, লবণাক্ততা ও তাপমাত্রার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়।

সেমিনারের সভাপতির বক্তব্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, সুন্দরবন নিয়ে নানামুখী গবেষণা হচ্ছে, নানা উদ্যোগ ও প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলছে, তথ্য-তত্ত্ব আহরণ করা হচ্ছে। তবে তা বিচ্ছিন্নভাবে হওয়ায় অভিলক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ক্ষেত্রে কাজ করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীনও হতে হচ্ছে। তাই সময় এসেছে সুন্দরবন নিয়ে গবেষণা বা কার্যক্রম বাস্তবায়নকারী বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশি সংস্থার যৌথ ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের।

অস্ট্রেলিয়ান প্রতিনিধি দলের প্রধান ড. নোরা ডেভো সুন্দরবন নিয়ে গবেষণায় সে দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থার আগ্রহের কথা উল্লেখ করে বলেন, এরইমধ্যে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমমূল্যের ২০ কোটি টাকার গবেষণা সহায়তা প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যাপারে তিনি দৃঢ় আশাবাদী।

আরও আলোচনা করেন অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচার রিসার্চের প্রতিনিধি ড. নোরা ডেভো এবং সংস্থার দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ড. প্রতিভা সিং, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান, অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচার রিসার্চের প্রতিনিধি অধ্যাপক অ্যান ফ্লেমিং, আইইউসিএন (এশিয়া অঞ্চল) এর সাবেক পরিচালক ড. জাকির হোসেন, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপ-প্রধান বন সংরক্ষক মো. জহির ইকবাল, বাংলাদেশ বন বিভাগের পক্ষে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিভাগ) নির্মল কুমার পাল প্রমুখ।