ইউক্রেন ইস্যুতে ইসরায়েলকে সতর্ক করলো রাশিয়া

ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের প্রতি সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে রাশিয়া। ইসরায়েল এমন পদক্ষেপ নিলে মস্কোর সঙ্গে তেল আবিবের সব ধরনের আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। খবর প্রাভদা।

রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ

রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান মেদভেদেভ বলেছেন, ইসরায়েল সরকার কিয়েভ প্রশাসনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে বলে মনে হচ্ছে। এটা হবে অত্যন্ত দায়িত্বহীন পদক্ষেপ। এতে করে দুই দেশের মধ্যে সব ধরণের আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক ধ্বংস হবে।

তিনি বলেন, ইসরায়েল যদি ইউক্রেনকে অস্ত্র দিতে পারে তাহলে তাদের একইসঙ্গে নাজি সংগঠক স্তেফান বান্দেরা ও শুকভিচকে ইসরায়েলি বীর হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। ইসরায়েলের হটকারি পদক্ষেপের পরিণতি হবে ভয়াবহ।

এর আগে ইসরায়েলের অনাবাসী বিষয়ক মন্ত্রী নাশমান শাই বলেন, ইসরায়েলের উচিত যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য ন্যাটোভুক্ত দেশের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া। বিশেষত ইরান যদি রাশিয়াকে সহায়তা করে তাহলে কিয়েভের ইসরায়েলি অস্ত্র সহায়তা পাবার সময় হয়েছে।

রাশিয়াকে মিসাইল সরবরাহ করতে চলেছে ইরান- এ মর্মে ওয়াশিংটন পোস্টে খবর প্রকাশ হওয়ার পর ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তাদের মতে, রাশিয়ায় ব্যাপক সংখ্যায় ড্রোন সরবরাহের মাধ্যমে ইরান এরইমধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের তৈরি ড্রোনের কার্যকারিতা, দক্ষতা ও অন্যান্য বিষয়ে নানা রকমের রিয়েল টাইম ডেটা পাচ্ছে। এসব তথ্য ইরানকে আরও শক্তিশালী ড্রোন তৈরিতে সহায়তা করবে। এবার যুদ্ধক্ষেত্রে ইরানি মিসাইল ব্যবহার শুরু হলে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিও সমৃদ্ধ হতে থাকবে।

ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়, ইরানের ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ফাতেহ-১১০ ও জুলফিকার মিসাইল সরবরাহের বিষয়ে মস্কো ও তেহরানের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যথাক্রমে ৩০০ কিলোমিটার ও ৭০০ কিলোমিটার দূরত্বে আঘাত হানতে পারে ফাতেহ-১১০ ও জুলফিকার মিসাইল। ইউক্রেনের মতো যেসব এলাকায় শক্তিশালী বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই, সেখানে খুব কার্যকর ইরানের এসব ড্রোন।

ইউক্রেন ও রাশিয়ার কয়েকটি অসমর্থিত সূত্রের বরাতে বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েল গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে ইউক্রেনকে যুদ্ধে সহায়তা করছে বলে খবর বেরিয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রুশ বাহিনীর ড্রোন হামলায় নাজেহাল ইউক্রেন ইসরায়েল থেকে এন্টি-ড্রোন সিস্টেম কিনছে বলেও ইসরায়েলি দৈনিক টাইমস অব ইসরায়েলের হিব্রু সংস্করণে খবর বেরিয়েছে। যেহেতু পোল্যান্ডের মাধ্যমে এসব এন্টি ড্রোন সিস্টেম কেনা হচ্ছে, তাই ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে না বলে দাবি করছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।

ইসরায়েল ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কে শীতলতা দেখা দিয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে। সিরিয়ার সরকারের প্রতি রাশিয়ার সমর্থনের কারণে ইসরায়েলকে সিরিয়ায় সামরিক কর্মকাণ্ড চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। ইরানপন্থী উপদলগুলোর বিরুদ্ধে হামলার কথা বলে ইসরায়েল সিরিয়ায় বিভিন্ন সময় বিমান হামলা চালিয়ে থাকে।