‘রিজার্ভের হিসাব নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ’

বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের হিসাব পদ্ধতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২৭ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ আবেদন নিয়ে বৈঠকে বসে ঢাকা সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন

দিনের প্রথমভাগের বৈঠকেই রিজার্ভের হিসাব পদ্ধতি আলোচনায় উঠে আসে, যেটি ফলপ্রসূভাবে এগোচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। একইসঙ্গে সংস্থাটির কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার বিষয়টি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

এদিন মধ্যাহ্ন বিরতির আগে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলোর বিষয়ে দুপুর ২টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আবুল কালাম আজাদ। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রিজার্ভের হিসাব পদ্ধতি নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের আলোচনা ফলপ্রসূ ও সন্তোষজনক বলা যায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের যে তথ্য নিয়মিত প্রকাশ করে আসছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে আইএমএফ। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী সংস্থাটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে রিজার্ভ হিসাবের কথাই বলে আসছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেদের মত করে হিসাব করছে; যাতে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলসহ (ইডিএফ) আরও কয়েকটি তহবিলে জোগান দেওয়া অর্থকেও অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠিত ইডিএফে সরবরাহ করা হয়েছে প্রায় ৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ বিমান, পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়া শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এজন্য মোট দেওয়া হয়েছে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফর হিসাবে এই পরিমাণ অর্থ রিজার্ভের হিসাবে থাকার কথা নয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত বুধবার পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমাণ হচ্ছে ৩৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাব মানলে এ থেকে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের মত।

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে রিজার্ভের নিট-গ্রস  হিসাবের প্রকৃত পরিমাণের তথ্য জানতে চায় প্রতিনিধি দল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। আইএমএফ প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার তিনি ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, একেএম সাজেদুর রহমান ও কাজী ছাইদুর রহমানকে নিয়ে আলোচনায় বসেন।

আইএমএফের দক্ষিণ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল গত বুধবার ঢাকায় আসেন। প্রথম দিন বৈঠকে বসে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে।