নতুন সরকার পেল ইরাক

অবশেষে নতুন সরকার পেল ইরাক। দেশটির সংসদ গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শিয়া আল সুদানির নেতৃত্বে ২১ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভার অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদন পাওয়ার পর নতুন প্রধানমন্ত্রী সুদানি বলেছেন, আমাদের মন্ত্রীরা এই সংকটময় সময়ে দেশের দায়িত্ব কাঁধে নেবে। বিশ্বে এই মুহূর্তে ব্যাপক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটছে এবং সংঘাত-সহিংসতা প্রত্যক্ষ করছে। ডয়েচে ভেলের খবর।

নতুন সরকার পেল ইরাক

গত বছরের অমীমাংসিত ভোটের পরে বিভিন্ন শিয়া উপদলের মধ্যে দ্বন্দ্বে দেশটির সংসদ রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে পড়ে যায়। সুদানি নূরে আল মালিকি সরকারের মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন।

৫২ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী সুদানি ইরানপন্থী সমন্বয় ফ্রেমওয়ার্ক পার্লামেন্টারি ব্লক থেকে এসেছেন। জনপ্রিয় ধর্মগুরু মোকতাদা আল-সদরের এমপিরা পদত্যাগের পর সুদানির ব্লকটি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। আল-সুদানি মোস্তফা আল-কাদিমির কাছ থেকে দায়িত্ব নিচ্ছেন। অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাদিমি দায়িত্ব পালন করছিলেন।

জনগণের অভিযোগ, রাজনৈতিক অচলাবস্থা জনগণের ক্ষোভকে প্রশমিত করতে কাদিমি তেমন কিছু করেনি। দুর্নীতির মহামারি ইরাককে যতটা কাবু করেছে, কোভিড-১৯ও ততোটা করেনি।

সংসদে নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী আল-সুদানি বলেন, ইরাকে দুর্নীতি অনেক অর্থনৈতিক সমস্যার কারণ। এটির রাষ্ট্রের কর্তৃত্বকে দুর্বল করে দিয়েছে। একই কারণে ইরাকে আজ দারিদ্র্য, বেকারত্ব জেঁকে বসেছে।

খবরে বলা হচ্ছে, ইরাক বছরের পর বছর ধরে সংঘাত ও অব্যবস্থাপনার শিকার হয়েছে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অচলাবস্থা দেশটির দুর্দশাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বাজেট ছাড়াই দেশ পরিচালিত হওয়া সাংঘাতিক অর্থনৈতিক হুমকি বয়ে এনেছে। এমনকি তেলের আয়ও রাজস্বে যুক্ত হচ্ছে না। চাকরি এবং সরকারি পরিষেবার অভাবে দেশে যে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল, তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেছে।

শিয়া নেতা মুক্তাদা আল সদর এবং তার অনুসারীদের বিরোধিতা আরও চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে দেশকে। পার্লামেন্টের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টায় হাজার হাজার মুক্তাদা সমর্থককে রাস্তায় নেমে পড়ছে। এতে কাজ না হলে তারা বেশ কয়েকবার ভবনে হামলা চালায় এবং দখল করে নেয়।

মুক্তাদা আল সদরের জনপ্রিয়তা ইরাকের শহর-নগর-গ্রামে সবখানে। এমন শ্রমিক পাড়ায়ও সদরের জনপ্রিয়তা রয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নুরে আল-মালিকির সমর্থনে আল সুদানি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় ফের দুর্দশার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভঙ্গুর রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে মুক্তাদার সমর্থকরা আবারও রাস্তায় নামতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।