অস্ট্রেলিয়ায় বন্যায় হাজারও মানুষ ঘরছাড়া

অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসের বেশ কয়েকটি শহরে বন্যায় হাজার হাজার বাসিন্দা বাড়িঘর থেকে সরে গেছে। ওই এলাকায় নদীর তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর পানি বিপদসীমা পেরিয়ে যাওয়ায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজ্যের গম উৎপাদনকারী অঞ্চল গ্রামীণ শহর ফোর্বসে বড় ধরনের বন্যা আঘাত হেনেছে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ওয়াগ্গা ওয়াগ্গা অঞ্চলের মুরুম্বিজি নদীর ধারে প্রায় ৭০ হাজার লোকের বাস

আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, শুক্রবার লাচলান নদীতে পানি প্রবাহের মাত্রা ৭০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। এবারের বন্যা ২০২১ সালের বন্যার চেয়ে ভয়াবহ হতে পারে।

ওয়াগ্গা ওয়াগ্গা অঞ্চলের মুরুম্বিজি নদীর ধারে প্রায় ৭০ হাজার লোকের বাস। ফোর্বসের মেয়র ফিলিস মিলার বলেছেন, বন্যার পানি শহরের কেন্দ্রস্থলে বাজার-ঘাটেও আঘাত হেনেছে। এজন্য স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ঠিক আছি কিন্তু এই বন্যার শেষ হবে কোথায়- তা অজানা।

ফোর্বস শহরের জনসংখ্যা ৮ হাজারেরও বেশি। উত্তর ওয়াগ্গা ওয়াগ্গার প্রায় ৭০০ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বহু বছরের লা নিনা আবহাওয়ার কারণে অতিরক্তি বৃষ্টিপাত দেখা দিয়েছে। এ কারণে অস্ট্রেলিয়ার পূর্বাঞ্চল এবছর চতুর্থ বড় বন্যা দেখল। এতে নানামুখী সংকটের মুখে এলাকাটি।

কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ বন্যাকে 'নীল-আকাশের বন্যা' হিসেবে বর্ণনা করছে, কারণ বৃষ্টিপাতে বাঁধ ভেসে গেছে এবং নদী থেকে পানি প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। সরকার সতর্ক করেছে, কৃষিজমি প্লাবিত হওয়ার ফলে ফল ও সবজির দাম বেড়ে যাবে। যা ইতোমধ্যেই ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে লড়াইরত পরিবারগুলোকে আরও যন্ত্রণা দেবে৷

উদ্ধার কর্মীরা হেলিকপ্টার ব্যবহার করে ১ হাজারেরও বেশি ভেড়াকে নিরাপদে স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে। ফোর্বসের একটি খামারে ভেড়াগুলো আটকে পড়েছিল। খামারটি ধীরে ধীরে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।

ফোর্বস গবাদি পশু খামারি চার্লস ল্যাভার্টি বলেন, ঘন ঘন বন্যা এ অঞ্চলের চাষীদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং অনেককে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সিকে তিনি বলেন, অনেকে (আমার প্রতিবেশী) এই অঞ্চলে ফসল কাটা ছেড়ে দিয়েছে, যা খুব ব্যয়বহুল। লোকসান তাদের জন্য ধ্বংসাত্মক হতে চলেছে।