রাশিয়া-ইউক্রেন উভয়কেই দায়ী করল জাতিসংঘ

ইউক্রেনের সংঘাতের সময় রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষই যুদ্ধবন্দীদের নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)। যুদ্ধবন্দীদের ওপর মারধর, বৈদ্যুতিক শক ও জোরপূর্বক বিবস্ত্র করাসহ নানা ধরনের দুর্ব্যবহারের কথা তুলে ধরেছে সংস্থাটি। খবর রয়টার্স।

রাশিয়ার একটি বন্দীশিবির

ওএইচসিএইচআরের ইউক্রেনভিত্তিক মনিটরিং টিম উভয় পক্ষের কয়েকশ যুদ্ধবন্দীর সাক্ষাৎকার নিয়ে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করে।

মনিটরিং মিশনের প্রধান মাতিলদা বোগনার জেনেভা প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, তারা ১৫৯ জন ইউক্রেনীয় বন্দীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তাদের অধিকাংশ নির্যাতন ও খারাপ আচরণের অভিযোগ করেছেন। তারা বলছে, তারা কুকুরের আক্রমণ, বৈদ্যুতিক শক, যৌন সহিংসতাসহ নানা ধরনের নির্যাতনের মুখোমুখি হয়েছেন। বন্দীদের ভয় দেখানো ও অপমানিত করার লক্ষ্যে তাদের সাথে এই ধরনের আচরণ করা হয়েছে।

মুক্তি পাওয়া ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীরা

ইউক্রেনের পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলের ওলেনিভকার কাছে একটি পেনাল কলোনিতে আটক একজন ব্যক্তি বলেছেন, রাশিয়ান-সহযোগী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা তার যৌনাঙ্গ এবং নাকের সাথে তার সংযুক্ত করে বৈদ্যুতিক শক দিয়েছে। তারা কেবল মজা করার জন্যই তার সাথে এ ধরনের আচরণ করেছে।

এছাড়া অন্য ইউক্রেনীয়রা জানিয়েছে, বন্দী অবস্থায় তাদেরকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, স্টান বন্দুক দিয়ে গুলি করা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডের হুমকি দেওয়া হয়েছে, হাত ও পায়ে দড়ি বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এবং সিগারেট দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে রাশিয়ান বন্দিরাও তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার এবং অপমানজনক আচরণের কথা জানিয়েছে। তাদের কেউ কেউ বলেছেন, তাদের নগ্ন ও হাত পিঠের পেছনে বাঁধা অবস্থায় ট্রাকে তোলা হয়েছিল। কিছু যুদ্ধবন্দীকে ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ছুরিকাঘাত করেছে বা বৈদ্যুতিক শক দিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার ওএইচসিএইচআর উভয় পক্ষের প্রতি জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী সমস্ত নির্যাতনের অভিযোগের তদন্ত ও বিচার করার আহ্বান জানিয়েছে। এ ব্যাপারে মস্কো দাবি করছে, তারা যুদ্ধবন্দীদের ওপর কোনো ধরনের নির্যাতন চালায়নি। অন্যদিকে কিয়েভ বলছে, তারা এ সংক্রান্ত অভিযোগের ব্যাপারে সব তথ্য পরীক্ষা করবে এবং কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।