সেতু দেবে যাওয়ায় ৩ প্রকৌশলী বরখাস্ত

টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন সেতু দেবে যাওয়ার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীসহ তিন প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া প্রকৌশলীরা হলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী রাজীব গুহ ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিন্নাতুল হক। এছাড়া সেতু নির্মাণে অনিয়ম হচ্ছে জেনেও আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়ায় টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়রকে কারণ দর্শানোর নোটিশও (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। 

টাঙ্গাইলের বেড়াডোমায় দেবে যাওয়া নির্মাণাধীন সেতু

বরখাস্ত হওয়া প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগনামা প্রাপ্তির ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তাদের লিখিতভাবে স্থানীয় সরকার বিভাগে এ বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।

রোববার, ২০ নভেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর-১ শাখার উপ-সচিব মো. আব্দুর রহমানের সই করা চিঠিগুলো স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সেতু নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ‘ব্রিকস্ অ্যান্ড বিল্ডিং লিমিটেড’ ও ‘দ্যা নির্মিতি কে (জেভি)’ সেতু নির্মাণে ডিজাইন ও প্রাক্কলন যথাযথ অনুসরণ না করায় এ দুই প্রতিষ্ঠানকে কালোতালিকাভুক্ত করা ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ১৬ জুন রাতে বেড়াডোমা এলাকায় লৌহজং নদীর ওপর সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেতু দেবে যায়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছিল। ৮ মিটার প্রস্ত ও ৪০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা।

বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নির্মাণাধীন সেতুটির ঢালাই কাজের আগে সেন্টারিং ও সাটারিংয়ের সময় ঠিকাদার ড্রয়িং ও ডিজাইন অনুসরণ না করে বল্লি ও বাঁশের খুঁটি ব্যবহার করেন। এ ব্যাপারে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রকৌশলীরা শুধু চিঠির মাধ্যমে তাদের নিষেধ করেন। তারা ঢালাইয়ের কাজ বন্ধ করার কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরং ঢালাইয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন। এটিকে দায়িত্বে চরম অবহেলা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।

এদিকে, পৌরসভার প্রকৌশলীদের সঙ্গে ঠিকাদার পক্ষের স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজনের অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং সেতু নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে জেনেও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া ও কাজের অগ্রগতির তুলনায় অতিরিক্ত বিল দেওয়ায় মেয়র এস এম সিরাজুল হককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।  এ প্রসঙ্গে মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর জানান, তারা মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছেন। তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চিঠির জবাব দিবেন।