খেরসন, মাইকোলাইভ থেকে লোকজন সরিয়ে নিচ্ছে ইউক্রেন

রাশিয়ার অব্যাহত গোলাবর্ষণের কারণে তাপ, বিদ্যুৎ ও পানির অভাবে এই শীতে বসবাসের অনুপযোগী হতে পারে, এমন আশঙ্কায় খেরসন ও মাইকোলাইভ অঞ্চল থেকে বেসামরিক লোকজন সরিয়ে নিতে শুরু করেছে ইউক্রেন। খবর আলজাজিরা।

সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে খেরসনের বাসিন্দাদের

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে বলা হয়, রুশ বাহিনী গত কয়েক মাস ধরে গোলাবর্ষণ করছে খেরসন ও মাইকোলাইভের এমন কিছু এলাকার বাসিন্দাদেরকে দেশের মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলের নিরাপদ এলাকায় সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক গতকাল সোমবার বলেছেন, সরিয়ে নেওয়া বেসামরিক লোকজনের মধ্যে নারী-শিশু ও বয়স্কদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরিবহন, বাসস্থান ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।

খেরসনের রাস্তায় ইউক্রেনের সেনাবাহিনী

বেশকিছু দখলে রাখার পর এ মাসের শুরুতে খেরসন থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয় মস্কো। এর পরপরই স্থানীয় বেসামরিক লোকজন নিজ বাড়িঘরে ফিরে আসতে থাকেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও খেরসন পরিদর্শন করে বিষয়টিকে রাশিয়ার পরাজয়ের শুরু বলে অভিহিত করেন। এর কিছুদিন পর স্থানীয় বাসিন্দা ও কর্তৃপক্ষ জানায়, রাশিয়ানরা সরে যাওয়ার আগে খেরসনের বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে।

ক্রিমিয়া ব্রিজে হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করে হামলা জোরদার করে রাশিয়া, পাওয়ার গ্রিডে বিমান ও ড্রোন হামলা চালায়। এতে এ পর্যন্ত ইউক্রেনের অর্ধেকের বেশি বিদ্যুৎ ও গ্যাস অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি। দেশটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর ব্ল্যাকআউটের শিকার হতে শুরু করে।

ইউক্রেনের স্টেট গ্রিড অপারেটর ইউক্রেনারগোর প্রধান ভলোদিমির কুদ্রিতস্কি জানান, ইউক্রেনের ২৭টি অঞ্চলের ১৫টিতে সোমবার চার ঘণ্টা বা তার বেশি লোডশেডিং ছিল। ইউক্রেনে স্বাভাবিকভাবেই শীত বেশি অনুভূত হয়। রাজধানী কিয়েভসহ অন্যান্য অংশে এরইমধ্যে তুষার পড়তে শুরু করেছে। বিদ্যুৎ-গ্যাসহীন অঞ্চলে বসবাস করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ফলে কর্তৃপক্ষ খেরসন ও মাইকোলাইভের লোকজনকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে।

এদিকে, জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) বলেছে, রুশ হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে তাৎক্ষণিক কোনো নিরাপত্তা উদ্বেগ নেই।

আইএইএ সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন, ব্যাপক গোলাগুলি সত্ত্বেও এ পারমাণবিক কেন্দ্রের মূল অবকাঠামো ও সরঞ্জামগুলো অক্ষত রয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে পারমাণবিক নিরাপত্তা বা নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ তৈরি হয়নি। ছয়টি চুল্লির অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি ও তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের নিরাপত্তাও বহাল রয়েছে। তবে বাইরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।