কম দামে চাল-আটা কিনতে ভিড়

দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। তাই কম দামের চাল কিনতে খাদ্য অধিদপ্তর পরিচালিত খোলাবাজারে ভিড় করছেন তারা। ৩০ টাকা কেজির ওএমএসের এই চাল বিক্রির নির্ধারিত স্থানে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়াচ্ছেন অনেকে। চাহিদা বেশি, সরবরাহ কম। তাই অনেককে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে। সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ

রাজধানীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মো. এনামুল হক। দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বোগতির বাজারে যে বেতন পান তা দিয়ে তার সংসার চলছে না। তাই কম দামে চাল ও আটা কেনার আশায় ওএমএসের বিক্রয়স্থান নীলক্ষেতে এসেছেন।  তিনি বলেন, ঢাকা শহরে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে বেতন পান ২০ হাজার টাকা। এই বেতন দিয়ে কয়েক বছর আগেও ভালোই চলতো। কিন্তু, জিনিসের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় আর চলছে না। 

একই অবস্থা আজিমপুর বিক্রয়স্থানে ওএমএসের চাল-আটা কিনতে আসা ব্যবসায়ী আব্দুল করিমের। তিনি বলেন, ওএমএসের দোকানে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে হবে, কোনো দিনও তা ভাবিনি। যা আয় হতো, তাতে ভালোভাবেই সংসার চলে যেত। এখন কোনোভাবেই আর সংসার চালাতে পারছি না। চাল, আটা, তেল, গ্যাস, সবজি থেকে শুরু করে প্রতিটি পণ্যের দামই নাগালের বাইরে চলে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছি।

ওএমএসের ক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন বাজারে নিম্নমানের চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ও আটা ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ওএমএসের বিক্রয়স্থানে চাল ৩০ টাকা ও আটা ২৪ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোর মানও ভালো। তাই এখানে চাল ও আটা কিনতে এসেছি।

রফিকুল নামে আরেকজন ক্রেতা  বলেন, পাঁচ বছর আগে যে চালের দাম ৩০ টাকা ছিল সেটি এখন বেড়ে প্রায় ৬০ টাকা হয়েছে। আটার দামও বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে বেতন বাড়েনি। বেতনের টাকা দিয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ওএমএস থেকে চাল কিনতে পারলে কিছুটা সাশ্রয় হয়।

মোহাম্মদপুর টাউন হলে ওএমএসের গাড়িতে চাল ও আটা বিক্রি চলছিল। সেখান থেকে ১০ কেজি চাল কিনে বাসায় ফিরছিলেন শামীমা খাতুন। তিনি বলেন, ১০ কেজি চালের জন্য আমাকে ৫০ টাকা বকশিশ দিতে হয়েছে। যে ৫ কেজি নিচ্ছেন তার থেকে ১৫০ টাকা নিচ্ছে। আর যে ১০ কেজি নিচ্ছে তাকে প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। 
ওএমএসের পণ্যের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ইকবাল হোসেন। পাশেই একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি। তিনি বলেন, কেউ ১০ কেজি চাল পায় কেউ খালি হাতে ফিরে যায়। 

এ বিষয়ে ওএমএসের বিক্রেতা মো. নোমান বলেন, তারা ১০ কেজির মাল বিক্রি করেন না। অনেক সময় দুজন লোক একটি লাইনে দাঁড়িয়ে বলে তাদের দুজনের চাল একটা ব্যাগে দেন। তখন বাধ্য হয়ে দুজনের পণ্য একটি ব্যাগে দিয়ে থাকি।