জনসাধারণের জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় কমানোর অঙ্গীকারের পাশাপাশি মন্ত্রিসভা ছোট রাখার কথা জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। একই সাথে জানিয়েছেন, এ দায়িত্ব পালন বাবদ তিনি কোনো বেতন নেবেন না। অন্য মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে কম বেতন দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। খবর আল জাজিরা ও স্টার মালয়েশিয়া।
আনোয়ার ইব্রাহিম
মালয়েশিয়ার সাম্প্রতিক নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও সর্বাধিক আসন পাওয়ায় আনোয়ার ইব্রাহিমকে সরকার গঠনে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেন দেশটির রাজা আবদুল্লাহ সুলতান আহমাদ শাহ। পূববর্তী সরকারপ্রধানদের সাথে আলোচনার পরই তাকে এ আহ্বান জানান তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শপথ গ্রহণ করেন এবং শুক্রবার প্রথম অফিস করেন। পরে স্থানীয় সময় বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নতুন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, নিশ্চিতভাবে মন্ত্রিসভার আকার হবে ছোট এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক। এতে দেশের সব শ্রেণির অংশগ্রহণ থাকবে। কম বেতন নেওয়ার বিষয়ে নতুন মন্ত্রীদের প্রস্তাব দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। তবে একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত পুরোপুরি স্পষ্ট। আর সেটা হলো, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি কোনো বেতন নেব না।
প্রথম দিন অফিসে ঢুকছেন আনোয়ার ইব্রাহিম
তিনি বলেন, তার সরকার জাতি বা ধর্ম নির্বিশেষে সকল মালয়েশিয়ান, বিশেষ করে প্রান্তিক ও দরিদ্রদের অধিকারের নিশ্চয়তা ও সুরক্ষা দেবে। আমরা সুশাসন, দুর্নীতিবিরোধী অভিযান, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং সাধারণ মালয়েশিয়ানদের কল্যাণে কখনই আপস করব না।
মানুষের জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় কমানো তার সরকারের মূল অগ্রাধিকার থাকবে উল্লেখ করে ৭৫ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ বলেন, কিছু কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। যেমন এ মুহূর্তে রিংগিত ও পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে শক্তিশালী হচ্ছে। এটি সরকারের প্রতি জনগণের আস্থার প্রকাশ। এখন দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে মূল নজরে দেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
গত শনিবার মালয়েশিয়ার অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে কোনো জোটই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ২২২ আসনের পার্লামেন্টে আনোয়ার ইব্রাহিমের পাকাতান হারাপান (পিএইচ) জোট সর্বোচ্চ ৮২টি আসনে জয়লাভ করে। অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের দল পেরিকাতান ন্যাসিওনাল (পিএন) পায় ৭৩ আসন। এর মধ্যে অন্য দলগুলো কাউকে সমর্থন দেবে না জানালে পরিস্থিতি অনেকটাই জটিল হয়ে পড়ে।
এ অবস্থায় রাজা আবদুল্লাহ সুলতান দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বসে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি আগের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে পরামর্শ করে আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।