আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইনায়াতুল্লাহ খাওয়ারিজমি বলেছেন, কাবুল ছেড়ে যাওয়ার সময় মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানের যেসব সামরিক বিমান ও হেলিকপ্টার নষ্ট করে গিয়েছিল, তার মধ্যে ৭০টি ঠিক করে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে। খবর আনাদোলু।
মার্কিন বাহিনী কর্তৃক নষ্ট করে যাওয়া হেলিকপ্টার
খাওয়ারিজমি বলেন, গত বছরের আগস্টে মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে যায়। এর আগেই তারা বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশে আফগানিস্তানের বিমান, হেলিকপ্টারগুলো পাঠিয়ে দেয়। যেগুলো পাঠানো সম্ভব হয়নি, সেগুলো তারা নষ্ট করে রেখে যায়, যেন পরবর্তী প্রশাসন এগুলো ব্যবহার করতে না পারে। ক্ষমতায় আসার পর একটি ব্যবহারযোগ্য বিমান-হেলিকপ্টারও পায়নি তালেবান প্রশাসন।
তবে আফগানিস্তানের বর্তমান প্রশাসন এই এক বছরের মধ্যে নষ্ট করে যাওয়া ৭০টির বেশি সামরিক বিমান-হেলিকপ্টার মেরামত করতে সক্ষম হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা খুচরা যন্ত্রাংশের চাহিদা মেটাচ্ছে নষ্ট হয়ে যাওয়া বা নষ্ট করে যাওয়া অন্যান্য সামরিক যান থেকে।
মেরামত করা হেলিকপ্টার ওড়ানো হচ্ছে
খাওয়ারিজমি জানান, আমাদের নিজস্ব উপায়ে এবং আমাদের প্রযুক্তিবিদদের সহায়তায় এ পর্যন্ত ৭০টিরও বেশি ধ্বংসপ্রাপ্ত বিমান এবং হেলিকপ্টার মেরামত করা হয়েছে। বর্তমানে সেগুলো আফগান বিমান বাহিনী বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে।
জানা গেছে, আগের ঘানি সরকারের সময় প্রায় ৬০০ জন পাইলট ও প্রযুক্তিবিদ আফগান বিমান বাহিনীর জন্য কাজ করেছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী গত বছরের আগস্টে দেশ ছেড়েছিলেন। তালেবান কর্তৃপক্ষ তাদেরকে দেশে ফিরে এসে কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানায়। সে অনুরোধে সাড়া দিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন পাইলট এবং প্রযুক্তিবিদ আফগানিস্তানে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে এসে বিমান বাহিনীতে পুনঃপ্রবর্তন ও ক্ষতিগ্রস্ত বিমান-হেলিকপ্টার মেরামতে অংশ নেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান খাওয়ারিজমি।
আফগানিস্তানের পূর্ববর্তী সরকারের সময় আফগান বিমানবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল ১৮৩টি প্লেন ও হেলিকপ্টার। মার্কিন বাহিনী দেশ ছাড়ার সংবাদে ৭০টির মতো প্লেন-হেলিকপ্টার প্রতিবেশী দেশ উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানে নিয়ে যায় পলাতক পাইলটরা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আফগানিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে উভয় দেশকে তাদের সামরিক বিমান এবং হেলিকপ্টার ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানায়। কিন্তু এ আহ্বানে তারা সাড়া দেয়নি।
খাওয়ারিজমি বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। যেহেতু বিমানগুলো আফগান জনগণের, তাই সেগুলো অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। ভাল প্রতিবেশী সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্যও এটি প্রয়োজন।
আফগান সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, আফগান সেনাবাহিনীতে বর্তমানে এক লাখের বেশি সামরিক সদস্য রয়েছে। আমরা আগের প্রশাসনের সেনাসদস্যদের নতুন সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছি। আমরা আগের প্রশাসনের সব সেনাসদস্যকে দেশে ফিরে আগের কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। যারা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে ফিরে এসেছে, আমরা তাদের সবাইকে গ্রহণ করেছি।