আফগানিস্তানে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা, ইরানফেরত ৭১ শরণার্থীর মৃত্যু

আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশে একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৭টি শিশুও রয়েছে। নিহতরা সবাই সম্প্রতি ইরান থেকে ফেরত পাঠানো আফগান শরণার্থী ছিলেন। একটি ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষের পর যাত্রীবাহী বাসটিতে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

আফগান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যাত্রীরা ইসলাম কালা সীমান্ত থেকে একটি বাসে করে রাজধানী কাবুলের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে হেরাত শহরের উপকণ্ঠে গুজারা জেলায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, বাসযাত্রীদের পাশাপাশি ট্রাকের দুজন এবং মোটরসাইকেলের দুজন আরোহীও এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।

হেরাত প্রদেশের সরকারি মুখপাত্র আহমাদুল্লাহ মুত্তাকী ও স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, বাসটির অতিরিক্ত গতি এবং চালকের অবহেলাই এই দুর্ঘটনার মূল কারণ।

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে দুর্বল সড়ক ব্যবস্থা, মহাসড়কে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো এবং যথাযথ নিয়ন্ত্রণের অভাবে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। গত বছরের ডিসেম্বরেও দেশটিতে এক ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় অন্তত ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এই দুর্ঘটনার মাত্র একদিন আগেই ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসকান্দার মোমেনি ঘোষণা দেন, আগামী মার্চের মধ্যে আরও আট লাখ আফগানকে দেশে ফিরতে বাধ্য করা হবে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, গত জুন মাস থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার লাখ আফগান শরণার্থী ইরান থেকে দেশে ফিরেছেন।

ইরানের দাবি, তাদের দেশে প্রায় ৬০ লাখ আফগান বসবাস করে, যার মধ্যে ৪০ লাখই অবৈধ। সংঘাত, নিপীড়ন, দারিদ্র্য ও তীব্র বেকারত্বের কারণে প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক আফগান সীমান্ত পেরিয়ে ইরানে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়। সেখানে তারা মূলত নির্মাণশিল্পসহ বিভিন্ন শহরে স্বল্প বেতনে কাজ করে।

২০২৩ সাল থেকে ইরান ও পাকিস্তান থেকে ব্যাপক হারে শরণার্থী ফেরত আসায় আফগানিস্তানের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরেই ১৪ লাখের বেশি মানুষ আফগানিস্তানে ফিরেছে, যাদের অনেককেই জোর করে ফেরত পাঠানো হয়েছে।