চীনা ঋণ পরিশোধে অপারগ জিবুতি
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
হর্ন অব আফ্রিকা অনঞ্চলের ক্ষুদ্র দেশ জিবুতি। ক্রমবর্ধমান ঋণের চাপে জর্জরিত দেশটি। এমন পরিস্থিতিতে জিবুতি তার দুই প্রধান দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতাকে 'ঋণ পরিশোধে অপারগতা' জানিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
চীনা ঋণ পরিশোধে অপারগ জিবুতি
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিবুতিতে চীনের বিশাল বাণিজ্যিক এবং সামরিক স্বার্থ রয়েছে। ভূ-কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিবুতির এমন সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে।
চীনা ঋণ নিয়ে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশ জাম্বিয়ার পর পূর্বাঞ্চলীয় দেশ জিবুতি ঋণের কিস্তি পরিশোধে অপারগতা প্রকাশ করেছে। ২০২০ সালে আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে জাম্বিয়া চীনা ঋণের খেলাপি হয়েছিল।
জিবুতি সম্পর্কে সর্বশেষ প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, দেশটির বাহ্যিক ঋণ পরিষেবা ব্যয় ২০২২ সালে তিনগুণ বেড়েছে; যা গত বছরে ৫৪ মিলিয়ন ডলার থেকে ১৮৪ মিলিয়ন ডলার এবং পরবর্তী বছর আরও বৃদ্ধি পেয়ে তা ২৬৬ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। আগামী বছর এ খরচ ২৬৬ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ডেট সার্ভিস সাসপেনশন ইনিশিয়েটিভের (ডিএসএসআই) হিসাবে জিবুতির বৈদেশিক ঋণের বকেয়া প্রতি বছর ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ হারে বাড়ছে। গত জুনে তা ১০১ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়, যা দেশটির জিডিপির ৩ শতাংশ।
অনলাইন তথ্যকেন্দ্র আরইডিডি ইন্টেলিজেন্সের জ্যেষ্ঠ ক্রেডিট রিসার্চ বিশ্লেষক মার্ক বোহলুন্ড গণমাধ্যমকে বলেছেন, জিবুতিতে চীনের ঋণ অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ২০২০ সালে জিবুতির বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার।
বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট পলিসি সেন্টারের হিসাবে, ২০০০ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে চীনের কাছ থেকে জিবুতি দেড় বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলে লোহিত সাগরের তীরে কৌশলগতভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ জিবুতি। আফ্রিকার সঙ্গে এশিয়া ও ইউরোপ সংযোগ সৃষ্টি করায় জিবুতি বন্দরের দিকে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর দৃষ্টি বহুকালের।
আয়তনের দিক থেকে ছোট হলেও এ দেশে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও জাপানের সামরিক ঘাঁটি আছে। ২০১৭ সালে চীন আফ্রিকার এই দেশে সামরিক ঘাঁটি গড়ে। জিবুতিতে চীন-পরিচালিত দোরালেহ বন্দরের পাশেই এই ঘাঁটি।
২০১৩ সালে ৪৯২ মিলিয়ন ডলার চীনা ঋণ খরচ হয়েছে জিবুতি থেকে ভূ-বেষ্টিত ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবার মধ্যে রেললাইন স্থাপনে এবং ৩২২ মিলিয়ন ডলার ঋণের অর্থ খরচ হয়েছে জিবুতি থেকে ইথিওপিয়ার হাদাগালা শহরের মধ্যে ১০১ কিলোমিটার দীর্ঘ পানি সরবরাহের পাইপলাইন তৈরিতে।
২০১৬ সালে চীনের কাছ থেকে ৩৪৪ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে জিবুতি নিজ দেশে দোরালেহ বহুমুখী বন্দর তৈরি করে। প্রতিবেদন অনুসারে, জিবুতি এসব ঋণ নিয়েছে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়না থেকে।
২০১৭ সালে মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল গড়তে জিবুতি চায়না মার্চেন্টস পোর্ট হোল্ডিংস কোম্পানি লিমিটেড থেকে ১৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেয়। এ ছাড়াও দোরালেহ বহুমুখী বন্দর সম্প্রসারণ করতে চীনের মার্চেন্ট গ্রুপ জিবুতিকে ৫৯০ মিলিয়ন ডলার তহবিল জোগায়।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্টেলেনবোশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড কম্পারেটিভ পলিটিক্সের গবেষণা ফেলো টিম জাজন্টজ বলেছেন, এটি সত্য যে করোনা মহামারি জিবুতির ঋণ পরিশোধের ক্ষমতাকে কমিয়ে দিয়েছে, তবে এর আগেই জিবুতির ঋণের স্থায়িত্ব প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।
জাজন্টজ বলেন, আকাশছোঁয়া বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি, প্রতিবেশী ইথিওপিয়ায় অর্থনৈতিক মন্দা এবং এ অঞ্চলের তীব্র খরা সাম্প্রতিক সময়গুলোতে জিবুতির অর্থনৈতিক অবস্থাকে আরও খারাপ করেছে।
জাজন্টজের পরামর্শ, সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চীনের উচিত জিবুতির সরকারের সঙ্গে ঋণ পুনর্গঠন নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করা; যেমনটি তারা এর আগে প্রতিবেশী দেশ ইথিওপিয়ার ক্ষেত্রে করেছিল।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.