যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ কূটনীতিক দাবি করছেন, ইউক্রেনের নাগরিকদের আলো কেড়ে নিয়ে যুদ্ধকে বর্বরতার একটি নতুন স্তরে নিয়ে গেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সুতরাং ইউক্রেনের সাথে শান্তি আলোচনার বিষয়ে তাকে কোনোভাবেই আন্তরিক বলা যাবে না। খবর আল জাজিরা।
কিয়েভ সফরে ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড কিয়েভে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাতের সময় এসব কথা বলেন। গত শনিবার তিনি কিয়েভ সফরে যান। তার সফরটি এমন সময়ে হচ্ছে, যখন রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর প্রায় পুরোটা ধ্বংস হয়ে গেছে।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কূটনীতি অবশ্যই সবার মূল লক্ষ্য। কিন্তু যে কোনো কিছুতে বিশেষ করে শান্তি আলোচনার জন্য একটি আন্তরিক মনোভাব থাকতে হবে বা ইচ্ছা থাকতে হবে। তবে ক্রেমলিন যেভাবে ইউক্রেনের ওপর হামলা চালাচ্ছে, তাতে এটি স্পষ্ট, পুতিন এ ধরনের আলোচনার জন্য আন্তরিক বা প্রস্তুত নন।
ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ার হামলা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, রাশিয়ার নেতা (পুতিন) যুদ্ধ শেষ করতে আগ্রহী হলে তিনি তার সাথে কথা বলতে প্রস্তুত। তবে ক্রেমলিন আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে মস্কো অধিকৃত চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের ঘোষণাকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানালে সে উদ্যোগ নস্যাৎ হয়ে যায়।
নুল্যান্ড বলেন, জো বাইডেনের প্রস্তাবে রাশিয়ার এই প্রতিক্রিয়াতেই বুঝা যায়, এ বিষয়ে তারা কতটা আন্তরিক বা ইচ্ছুক।
গত অক্টোবর থেকে রাশিয়া প্রায় প্রতি সপ্তাহে ধারাবাহিকভাবে ইউক্রেনের বিভিন্ন জ্বালানি অবকাঠামোতে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে। কিয়েভ দাবি করছে, বেসামরিক এসব স্থাপনায় হামলা চালিয়ে মস্কো যুদ্ধাপরাধ করছে।
নূল্যান্ড এ বিষয়ে বলেন, পুতিন যুদ্ধটিকে বর্বরতার একটি নতুন স্তরে নিয়ে গেছেন। এ ধরনের হামলার মাধ্যমে তিনি ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদের বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। যুদ্ধের মাধ্যমে তিনি যা অর্জন করতে পারেননি, বর্বর এসব হামলার মাধ্যমে তিনি তাই অর্জন করার চেষ্টা করছেন।
তবে নুল্যান্ডের এসব মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। সার্বিয়াতে ১৯৯৯ সালের হামলার দিকে ইঙ্গিত করে জাখারোভা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রাম চ্যানেলে লেখেন, বিশ্বকে সবক দেওয়া নুল্যান্ডের উচিত নয়। কারণ সার্বিয়ায় হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান সার্বিয়ার ৭০ শতাংশের বেশি এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছিল।