আপনি পড়ছেন

২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনে প্রথম কোভিড ১৯-এর কথা শোনা গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সেখান থেকেই পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এ মহামারি। এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৬৬ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেলেও চীনে মৃত্যু বা আক্রান্তের পরিমাণ ছিল একেবারেই কম। তবে সম্প্রতি সেখানে আবারও ব্যাপকাকারে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানা গেছে। খবর হিন্দুস্তানটাইমস।

china covidচীনে কোভিড সংক্রমণ ও মৃত্যু উভয়টিই বেড়েছে

গত তিন বছর ধরে চীন কোভিড ঠেকাতে নজিরবিহীনভাবে লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন ও গণপরীক্ষা চালিয়ে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে চীনের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ হলে চীন কর্তৃপক্ষ এসব বিধিনিষেধের অনেকটাই তুলে নেয়। তবে সিদ্ধান্তটি যে যথাযথ ছিল না, তা কয়েকদিনের মধ্যেই টের পাওয়া গেছে। এ কয়দিনে চীনের বিভিন্ন এলাকায় হাসপাতালগুলো কোভিড আক্রান্ত লোকজনে ভরে গেছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি সৎকারকেন্দ্রে লাশের স্তূপ জমেছে বলে সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা গেছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, চীনের কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব ভাইরাসের নতুন পরিবর্তনের জন্ম দিতে পারে।

চীনের মহামারী বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ এরিক ফেইগল-ডিং জানান, চীনের হাসপাতালগুলো এখন কোভিড রোগীতে পরিপূর্ণ হয়ে আছে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে চীনের ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষের কোভিড সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই সাথে কয়েক লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কথাও বলছেন তিনি।

china covid testচীনে কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে

স্পষ্ট কোনো সংখ্যা জানা না গেলেও বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, চীন কোভিডে মৃতদের জায়গা সংকুলান করতে পারছে না। হঠাৎ করেই এত মৃত্যুর স্রোত মোকাবেলা করতে খেই হারিয়ে ফেলছে বিভিন্ন প্রদেশের কর্তৃপক্ষ। তিন কোটি মানুষের শহর চংকিং কর্তৃপক্ষ স্বীকার করছে, এত মৃতদেহ রাখার জায়গা তাদের নেই। এছাড়া তারা ওষুধ সংকটেও পড়েছেন।

এদিকে চীন গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে, তারা কোভিড -১৯ মৃত্যুর ক্ষেত্রে সংজ্ঞা নতুন করে সাজিয়েছে। এর ফলে কোভিডে মৃত্যু হিসেবে কেবল তাদেরই ধরা হবে, যারা কোভিড পজেটিভ ছিলেন এবং শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। কোভিডে অসুস্থ হয়ে হার্ট অ্যাটাক বা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত অবস্থায় মারা গেলে সেটিকে কোভিডে মৃত্যু বলে গণ্য করা হবে না।

সমালোচকরা বলছেন, চীনে কোভিড সংক্রমণ ব্যাপকাকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মৃত্যুর হারও দ্রুতগতিতে বাড়ছে। তবে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই কোভিডে মৃত্যুর সংজ্ঞা পরিবর্তন করেছে চীন। কারণ চীনের বিভিন্ন অংশে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে অনেকে মারা যাচ্ছেন। কিন্তু ক্যাটাগরির ভিন্নতায় ফেলে চীন এ সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছে।

চীনের হাসপাতাল ও সৎকার কেন্দ্রগুলো উপচে পড়া ভিড় থাকলেও সরকার এই মাসে কোভিডে মাত্র ১০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। অথচ চংকিংয়ের একটি সৎকারকেন্দ্রের কর্মী দাবি করেন, তাদের মৃতদেহ রাখার জায়গা ফুরিয়ে গেছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আগের তুলনায় অনেক বেশি মৃতদেহ আসছে। কিন্তু সেগুলো রাখার জন্য আমাদের কাছে কোনো হিমাগার নেই।

অন্যদিকে গুয়াংজু প্রদেশের দক্ষিণ মেগাপোলিসে, জেংচেং জেলার একটি সৎকারকেন্দ্রের একজন কর্মচারী জানান, তারা প্রতিদিন ৩০টিরও বেশি মৃতদেহ দাহ করছেন। শহরের আরেকটি সৎকারকেন্দ্র থেকেও একই বার্তা দিয়ে বলা হয়, সৎকারকাজে তারা অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন। স্বাভাবিক সময়ে আমরা যেখানে ডজনখানেক মৃতদেহ দাহ করি, সেখানে এখন আমাদের দিনে ৪০টির বেশি মৃতদেহ সৎকার করতে হচ্ছে। তারা দাবি করেন পুরো গুয়াংজুর চিত্র একই রকম।

গুয়াংজুর উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর শেনিয়াংয়ের একটি বেসরকারি সৎকার কেন্দ্রের এক কর্মী জানান, তাদের কাছে এত বেশি লাশ এসেছে, সৎকার ছাড়াই লাশগুলো পাঁচদিনের বেশি সময় ধরে পড়ে থাকছে।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.