পুতিন: লড়াই চালিয়ে যাওয়া আমাদের লক্ষ্য নয়

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওয়াশিংটন সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তা মস্কোর লক্ষ্য অর্জনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া। তারা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ এই সহায়তা যুদ্ধ সমাপ্তিতে যেমন অবদান রাখবে না তেমনি রাশিয়াকে তার লক্ষ্য অর্জন থেকে বাধাও দিতে পারবে না।

প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র

বিশ্বজুড়ে প্যাট্রিয়ট বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অত্যাধুনিক একটি ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হলেও পুতিন একে ‘বেশ পুরোনো’ সিস্টেম বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়া এটি মোকাবেলার একটি উপায় খুঁজে নেবে। তবে তিনি দাবি করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চায় রাশিয়া এবং এটি অনিবার্যভাবে একটি কূটনৈতিক সমাধানের সাথে জড়িত।

তিনি বলেন, এ লড়াই চালিয়ে যাওয়া আমাদের লক্ষ্য নয়। বরং আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব এই যুদ্ধের অবসান ঘটানোর। আমি এর চেষ্টা করছি এবং এটি যত তাড়াতাড়ি হয়, ততই ভালো।

বাইডেনের সাথে জেলেনস্কির সাক্ষাৎ

এদিকে পুতিনের মন্তব্যের জবাবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের মাধ্যমে শুরু হওয়া যুদ্ধের অবসানের জন্য পুতিন প্রস্তুত- কখনোই এমন কিছু দেখা যায়নি। পুতিন আলোচনা করতে আগ্রহী- এমন পরিস্থিতিও কখনো দেখা যায়নি।

এক অনলাইন ব্রিফিংয়ের সময় তিনি সাংবাদিদের বলেন, পুতিন যা করছেন, তার বিপরীতটাই বলছেন। তিনি স্থল ও বিমান আক্রমণ করে ইউক্রেনের জনগণের উপর সহিংসতা চালিয়ে যেতে চান এবং যুদ্ধকে আরও বাড়িয়ে তুলতে চান।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রাম অ্যাপে বলেছেন, তিনি ওয়াশিংটন থেকে ভালো ফলাফল নিয়ে ফিরে আসছেন। তিনি গত বুধবার ওয়াশিংটন সফরে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। সেখানেই বাইডেন তাকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ সহায়তার ঘোষণা দেন। গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর এটাই তার প্রথম কোনো বিদেশ সফর।

তবে কিয়েভকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রসহ অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার খবরে রাশিয়া প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, ইউক্রেনে পাঠানো এসব ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার বৈধ লক্ষ্যবস্তু হিসেবে গণ্য হবে। একই সাথে এসব ক্ষেপণাস্ত্র পরিচালনায় যেসব কর্মী মোতায়েন করা হবে, তারাও রাশিয়ান সেনাবাহিনীর লক্ষ্য হবে। রাশিয়ান সেনাবাহিনীর চিফ অফ স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইউক্রেনে এভাবে অস্ত্র প্রেরণের মাধ্যমে ওয়াশিংটন সক্রিয়ভাবে এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যা করছে তা চলমান সংঘাত দ্রুত নিষ্পত্তির পক্ষে সহায়ক নয়, বরং একেবারে বিপরীত। তবে তাদের এসব সহায়তা রাশিয়াকে বিশেষ সামরিক অভিযানে তার লক্ষ্য অর্জনে বাধা দিতে পারবে না।