আফগানিস্তান বিষয়ে আসছে কঠোর সিদ্ধান্ত!

নারীদের কাজ করা বন্ধ করতে তালেবান প্রশাসনের দেওয়া আদেশের বিষয়ে আজ বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ ও আফগানিস্তানে সক্রিয় এনজিওগুলো। বৈঠক থেকে আফগানিস্তানে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। খবর এএফপি।

আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সক্রিয় এনজিওগুলোর জনবলের এক বড় অংশ নারী কর্মী

তালেবান প্রশাসন গতকাল শনিবার এনজিও কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আফগানিস্তানে সক্রিয় সব এনজিওকে আদেশ দেওয়া হয়েছে যাতে সংস্থাগুলোর নারী কর্মীদের কাজে যোগদান বন্ধ করা হয়। আদেশ পালনে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট এনজিওর লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়েছে তালেবানরা।

আফগানিস্তানে এনজিও কার্যক্রম চালাতে সেখানকার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের কাছে এ মর্মে গুরুতর অভিযোগ এসেছে যে এনজিওতে কর্মরত নারীরা ইসলামী পোশাক রীতি যথাযথভাবে অনুসরণ করছেন না।

আফগানিস্তানে জাতিসংঘের মানবিক কার্যক্রম সমন্বয় দপ্তরের (ইউএন-ওচা) জনসংযোগ কর্মকর্তা তাপিওয়া গোমো জানিয়েছেন, তালেবান নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আলোচনা এবং পরিস্থিতি মোকাবেলার উপায় সম্পর্কে পরামর্শ করতে আজ রোববার হিউম্যানিটারিয়ান কান্ট্রি টিমের (এইচসিটি) বৈঠক হবার কথা রয়েছে।

আফগানিস্তানে সক্রিয় একাধিক এনজিও কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সবশেষ তালেবান নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আফগানিস্তানে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করা হবে কিনা, সে বিষয়ে আজকের এইচসিটি বৈঠকে আলোচনা হবে। জাতিসংঘের স্থানীয় কার্যালয়ের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন কর্মকর্তা এবং সক্রিয় স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে এইচসিটি গঠিত বলে তারা জানান।

জাতিসংঘ বলেছে, নারী কর্মীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে তালেবান প্রশাসনের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সব ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে নারীদের বঞ্চিত করার এ আদেশ আফগানিস্তানকে পেছনে টেনে নেবে এবং দেশটিতে অর্থবহ শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনার সব প্রয়াসকে ব্যাহত করবে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন বলেছেন, এ নিষেধাজ্ঞা আফগানদের জন্য বিপর্যয়কর হবে কেননা এর ফলে লাখো কোটি মানুষের জন্য জরুরি ও জীবন বাঁচানিয়া সহায়তা কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে। আফগানিস্তানের কোটি কোটি মানুষ যখন বিশাল বিস্তৃত এনজিও নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ হওয়া সহায়তার ওপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল, তখন এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো।

আফগানিস্তানে সক্রিয় এনজিওগুলোতে কর্মরত বিদেশি নারীরা নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলে কর্মরত এনজিওগুলোর জনবলের বড় অংশ নারী। নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্যক্রম চালানো কঠিন হবে বলে এনজিও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এর আগে গত সপ্তাহের শেষে নারীদের উচ্চ শিক্ষা নিষিদ্ধ করে তালেবান প্রশাসন। গত বছর আগস্টে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পরপর তারা হাইস্কুলে নারীদের শিক্ষাদান নিষিদ্ধ করে।

নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্নিকেন হুইটফেল্ড এনজিওতে নারীদের অংশগ্রহণে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কঠোর সমালোচনা করে তালেবান প্রশাসনের প্রতি অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন।