কাঠগড়ায় দাঁড়াচ্ছেন ১৩ বিচারক!

তিউনিসিয়ার প্রসিকিউটররা দেশের শীর্ষ বিচারিক সংস্থার কাছে ১৩ জন বিচারকের বিশেষ সুবিধা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন, যাতে সন্ত্রাসের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যায়। তবে অভিযুক্ত বিচারকদের পক্ষ থেকে এ প্রচেষ্টাকে পুরোপুরি রাজনৈতিক বলে দাবি করা হয়েছে। খবর দ্য ডন।

বিচারকদের ধর্মঘট, ফাইল ছবি

তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদ গত জুন মাসে একযোগে ৫৭ জন বিচারককে বরখাস্ত করেছিলেন। তার ছয় মাস পর নতুন করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিচারকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং ২০১৩ সালে দুজন বামপন্থী রাজনীতিবিদের তদন্তে বাধা দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।

দেশটির বিচার মন্ত্রণালয় দাবি করছে, নিরাপত্তা প্রতিবেদনে উল্লিখিত সন্ত্রাসী অপরাধের জন্য তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে বিষয়টিকে পুরোপুরি রাজনৈতিক আখ্যা দিয়ে বিচারকদের আইনজীবী আয়াচি হাম্মামি বলেন, ৫৭ জন বরখাস্ত বিচারকের মধ্যে আগস্টে যে ৪৯ জনকে পুনর্বহাল করা হয়েছে, এই ১৩ জন তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। অভিযুক্ত বিচারকদের আগামী ২৪ জানুয়ারি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের (সিএসএম) সামনে হাজিরা দিতে হবে।

তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদ

২০২১ সালের জুলাই মাসে কায়েস সাঈদ নাটকীয়ভাবে ক্ষমতা দখল করেন। পরে তিনি সরকার বরখাস্ত করে সংসদ স্থগিত করে দেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি শীর্ষ বিচার বিভাগকেই ভেঙে দিয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের (সিএসএম) গঠন করেন, যার সদস্যদের বাছাই করেন প্রেসিডেন্ট নিজে এবং কোনো ধরনের কারণ দর্শানো ছাড়াই তাদের বরখাস্ত করতে পারেন।

এরই ধারাবাহিকতায় দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসীদের রক্ষা করার অভিযোগে ৫৭ জন বিচারককে বরখাস্ত করেন কায়েস সাঈদ। এভাবে বিচার বিভাগে প্রেসিডেন্টের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে রাজপথে নেমে সপ্তাহব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দেন তারা। তার বিরুদ্ধে এককভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা ছাড়াও নির্বাচন কমিশন থেকে বিচার ব্যবস্থা সব জায়গাতেই হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ রয়েছে।

১০ বছর আগে তিউনিসিয়াতে বিপ্লবের সূত্রপাত হয়। সে সময় গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন দাবিতে ঝড় ওঠে দেশটিতে। ক্রমশ সেই বিপ্লবের আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো আরব বিশ্বে, যার নাম দেওয়া হয় আরব বসন্ত। অনেক দেশই শান্ত হয়ে এসেছে। তবে এক দশক পেরিয়ে গেলেও তিউনিসিয়ার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক কোনো সংকটেরই সুরাহা হয়নি।