বেপরোয়া এম২৩ মিলিশিয়া, বিপন্ন গরিলারা

এম২৩ ডিআর কঙ্গোর একটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী। সম্প্রতি ‘ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানের’ নিকটবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তাদের এই উত্থানে কঙ্গোর বিপন্ন প্রাণী গরিলার জীবনযাপন হুমকির মুখে পড়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যরা বনে-বাদাড়ে সশস্ত্র নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে এবং এ কারণে বন থেকে প্রাণিগুলো সরে যাচ্ছে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

শিশুকে নিয়ে একটি মা গরিলা

এমনিতেই ডিআর কঙ্গোতে মানবিক সংকট বিরাজ করছে। এরমধ্যেই ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানে এম২৩ বিদ্রোহী গ্রুপ বন উজাড়, চোরাশিকার এবং অবৈধ চাষাবাদে লিপ্ত হয়েছে। ফলে প্রাণীদের জীবন সংকটে পড়েছে। এই এলাকাটি গরিলার অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত।

গরিলা তৃণভোজী। পৃথিবীতে টিকে থাকতে প্রাণীটি এমন এলাকায় লড়াই করছে, যে এলাকা বিশ্বের সবচেয়ে অস্থির সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোর একটি। ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানে ১০০০টির মতো গরিলার বসবাস। উদ্যানটি টিকে ছিল রুয়ান্ডা, কঙ্গো ও উগান্ডা সরকারের মিলিত পদক্ষেপের ফলে। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে এ উদ্যান।

১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যান, তখন কঙ্গো বেলজিয়ামের উপনিবেশ ছিল। ভিরুঙ্গা নামটি ছিল আমেরিকান সংরক্ষণবাদী ডায়ান ফসির লেখার বই 'গোরিলাস ইন দ্য মিস্ট'-এর একটি প্রাণীর নাম, যার চরিত্র হলিউড মুভিতে হিট করেছিল।

২০২১ সালে শেষ আদমশুমারিতে কঙ্গোলি অঞ্চলে আনুমানিক ৩৫০ পর্বত গরিলা শনাক্ত হয়। তখনও ভিরুঙ্গা উদ্যান হুমকির মুখে ছিল না। এর আয়তন লন্ডন শহরের প্রায় পাঁচগুণ। গরিলারা ঠিক মানুষের মতোই বন্দুক থেকে দূরে থাকতে চায়। বিদ্রোহীরা তাদের এই অভয়ারণ্য দখল করায় বেকায়দায় পড়েছে গরিলারা।

কঙ্গোয় ১২০টির বেশি সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। তারা নানা অভিযানের সময় ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যান ব্যবহার করে। সম্পদ ও ভূখণ্ড নিয়ে সংঘাতে জড়ায়। স্থানীয় মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে প্রায়ই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

এভাবেই বছরের পর বছর ধরে নিহত হয়েছে শত শত গরিলা। সরকারি বাহিনীর ক্রসফায়ার, শিকারিদের বন্দুক কিংবা সশস্ত্র বিদ্রোহীদের হাত প্রাণ দিতে হয়েছে তাদের। ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানের সদরদপ্তর এখন এম২৩ বাহিনীর দখলে। সংরক্ষণবাদীরা এখানে ঢুকতে পারছে না, বনরক্ষীদেরও প্রবেশাধিকার নেই।