রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩২.৫৭ বিলিয়ন ডলারে

আবারও দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১১২ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ২৫৭ কোটি ডলার। এর মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক

৮ জানুয়ারি, রোববার সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। সোমবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবা উল হক।

তথ্য অনুযায়ী, রোববার দিন শেষে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলারে। গেল বৃহস্পতিবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৩ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার বা ৩ হাজার ৩৬৩ কোটি ডলার।

ইতোমধ্যে দেশে ব্যাপক ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভ আরও কমেছে। এদিকে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১১২ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এরপর রিজার্ভ ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ২৫৭ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

আকু হলো একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। দায় পরিশোধের মতো রিজার্ভ না থাকায় গত অক্টোবরে আকু থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে শ্রীলঙ্কা।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর মানদণ্ড অনুযায়ী, মোট রিজার্ভ থেকে আরও ৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার বাদ যাবে। এতে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে দাঁড়াবে। সংস্থাটির মানদণ্ড অনুসারে, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ঋণ এবং দেশীয় প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যয় বাদ যাবে রিজার্ভ থেকে। তবে বর্তমানে আইএমএফ এবং নিজস্ব অর্থাৎ দুই ধরনের হিসাবই রাখছে সরকার।

অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার ইতিবাচক ধারায় ফেরাতে আমদানি দায় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন আমদানিতে বাণিজ্যিক ঋণপত্র (এলসি) কমলেও আগের দায় পরিশোধে কিছুটা চাপের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ কমেনি। গত নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে আমদানি দায় ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ পরিশোধ বেড়েছে।

আর বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে ৬ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে। গত বছর আমদানি দায় পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ১২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার বেচে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। আর ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছিল। করোনার প্রভাব আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে রিজার্ভ ফের কমতে থাকে। সবশেষ রিজার্ভ ৩৩ থেকে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ছিল।