যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি: যা বললেন ওয়াসার এমডি তাকসিম

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে আমি ১৪টা বাড়ি কিনেছি, যে অভিযোগ উঠেছে তা মিথ্যা। ১৪টা নয়, যুক্তরাষ্ট্রে আমার স্ত্রীর নামে একটা বাড়ি আছে। সেখানে আমাদের আর কোনো বাড়ি নেই।

তাকসিম এ খান

১০ জানুয়ারি, মঙ্গলবার কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ওয়াসার এমডি।

এ সময় তাকসিম এ খান বলেন, আমার নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে দেখলাম। সেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে আমি ১৪টা বাড়ি কিনেছি। কিন্তু এটা ডাহা মিথ্যা কথা। যুক্তরাষ্ট্রে আমার কোনো বাড়ি নেই। প্রতিবেদনে যে ১৪টা বাড়ির কথা বলা হচ্ছে তার মধ্যে শুধু একটা বাড়ি আমার স্ত্রীর নামে কেনা। বাকি কোনোটিই আমার বা আমার পরিবারের কারও নয়।’

তিনি আরও বলেন, যে ১৪টা বাড়ির ঠিকানা দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে আমরা ৫টা বাড়িতে আমার পরিবার বিভিন্ন সময়ে ভাড়া থেকেছে। এছাড়া একটা বাড়ি আছে আমার স্ত্রীর নামে। আমি, আমরা স্ত্রী, সন্তান সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। 

ওয়াসার এমডি বলেন, আমার স্ত্রী-সন্তান যুক্তরাষ্ট্রে ‌‘ওয়েল স্টাবলিস্ট’। তাই সেখানে বাড়ি কেনায় সমস্যার কিছু দেখি না। আমার স্ত্রীর নামেই ওই একটা বাড়িই আছে। সেটাকে বাড়িও বলা যাবে না, এটা একটা অ্যাপার্টমেন্ট।’

‘যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াসার এমডির ১৪ বাড়ি’ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ১৪টি বাড়ি কিনেছেন ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। সব বাড়ির দাম টাকার অঙ্কে হাজার কোটি ছাড়াবে। অর্থ পাচার করে তিনি এসব বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে বাড়ি কেনার অর্থের উৎস ও লেনদেন প্রক্রিয়ার বিষয়ে অনুসন্ধান করছে ইন্টারপোলসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। বিপুল পরিমাণ অর্থে একের পর এক বাড়ি কেনার ঘটনায় দেশটির গোয়েন্দা বিভাগের চোখে পড়েছেন তাকসিম। তাই সন্দেহভাজনদের তালিকায় তার নাম রাখা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি কেনা ও অর্থ পাচার সংক্রান্ত বিষয়ে তাকসিম খানের বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুটি অভিযোগ জমা পড়ে দুদক। অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি কেনা সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। তাকসিম সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) 'গভর্নমেন্ট ওয়াচ নোটিশ'-এর একটি কপি অভিযোগের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।'

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিআইএসহ যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস (ডিওজে), ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই), দেশটির অন্যান্য সংস্থা ও ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল) তাকসিম এ খানের বিষয়ে কাজ করছে বলে ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খান যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি কেনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দাখিল করা দুটি অভিযোগের অনুসন্ধান কতটুকু হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জানানো নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

প্রতিবেদনটি নজরে আসলে ৯ জানুয়ারি, সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।