লন্ডনে বাড়ি কেনায় শীর্ষ দশে বাংলাদেশিরা

লন্ডনে একটা বাড়ি হবে কে না চায়। বিশ্বের ধনী কিংবা গরিব রাষ্ট্রের বড় বড় ব্যবসায়ী অথবা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিদেশে বাড়ি কেনায় প্রথম পছন্দের শহর লন্ডন। সম্প্রতি দেশটির আবাসন খাতে বিদেশি ক্রেতাদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় শীর্ষ ১০ এ রয়েছে বাংলাদেশি ক্রেতাদের নাম।

লন্ডন শহর

ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও দামি জমি (বাড়ি, হোটেল, দোকান, জমি ইত্যাদি) ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিদেশিদের তালিকায় নবম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশিরা।

দেশটির আবাসন খাতের পরামর্শক কোম্পানি অ্যাসটনসের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এসব তথ্য। বিনিয়োগের মাধ্যমে স্থায়ী বসবাস এবং নাগরিকত্ব প্রাপ্তির মতো বিষয় নিয়ে কাজ করে অ্যাসটনস।

প্রতিষ্ঠানটির ২০২০ সালের পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের হাউজবিল্ডিং শিল্পখাত বিষয়ক সাময়িকী শোহাউজ লন্ডনের সম্পত্তিতে বিনিয়োগকারী শীর্ষ ১০টি দেশের এই তালিকা প্রকাশ করেছে।

অ্যাসটনের বিশ্লেষণ থেকে জানা গেছে, বিশ্বের অর্থ ও বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র লন্ডনে ২০২০ সালে গড়ে ১১ কোটি ৯০ লাখ পাউন্ডের কিছু বেশি দামে সম্পত্তি কেনাবেচা হয়েছে। এক্ষেত্রে ওই বছরের ৬ হাজার ৪৩৮টি লেনদেনের তথ্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

লন্ডনের বিভিন্ন এলাকার পোস্ট কোডের ভিত্তিতে এক বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, শহরের সবচেয়ে দামি সম্পত্তিগুলো কমবেশি ৮১০ কোটি পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে। এসব সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে ৪১ শতাংশ অর্থের উৎস যুক্তরাজ্যের বাইরে থেকে আসা। অর্থাৎ ক্রেতারা হয় অন্য কোনো দেশের নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান। যারা ৩৩২ কোটি পাউন্ডের সম্পত্তি কিনেছে।

অ্যাসটনের প্রতিবেদন বলছে, ২০২০ সালে লন্ডনের ‘প্রাইম প্রপার্টি’ বা ‘আকর্ষণীয় সম্পত্তি’ কেনার ক্ষেত্রে যে ১০টি দেশের ক্রেতারা সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন, তাদের মধ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। আর নবম স্থানে বাংলাদেশিরা। দশম স্থানে আছেন জাপানিরা।

লন্ডনে মূল্যবান সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে বিদেশিদের মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৭ শতাংশের যোগান গেছে বাংলাদেশি উৎস। এক্ষেত্রে জাপান থেকে গেছে ২ দশমিক ৮ শতাংশ।

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯৮টি সম্পত্তি কিনেছেন বাংলাদেশিরা, যার ক্রয়মূল্য ১২ কোটি ২২ লাখ ৯০ হাজার পাউন্ড।

তবে লন্ডনের সম্পত্তি নিয়ে অ্যাসটনের পরের দুই বছরের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। ২০২০ সালের এই পরিসংখ্যান থেকে বিদেশে বাংলাদেশিদের সম্পত্তি কেনার বিষয়ে একটি ভালো ধারণা পাওয়া যায়।

২০২০ সালের ওই পরিসংখ্যান অ্যাসটনের আরও বলছে, প্রথম ৯ মাসে লন্ডনের দামী সম্পত্তির বাজারে বিদেশি ক্রেতা হিসেবে ফরাসিরা ১১ শতাংশ জায়গা দখল করেছিল। যাদের কাছে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ডের সম্পত্তি বিক্রি করা হয়।

এছাড়া হংকং ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে। দুই দেশের ক্রেতারাই সেই সময় ৯ দশমিক ২ শতাংশ করে বিনিয়োগ করেছে। যার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ড।

সেই বছরের তালিকায় বেশ খানিকটা পিছিয়ে ছিল চীন। ৮ দশমিক ৩ শতাংশ সম্পত্তি কিনেছে তৃতীয় অবস্থানে থাকা চীনা ক্রেতারা। যার অর্থমূল্য ২৭ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড। অথচ আগের বছরগুলোতে লন্ডনের আবাসন খাতে শীর্ষ বিনিয়োগকারী ছিল চীনারাই।

এদিকে পঞ্চম অবস্থানে ছিল ভারতীয় ক্রেতারা। যাদের বিনিয়োগ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ বা ২৪ কোটি ২০ লাখ পাউন্ড। এছাড়া ইতালি, সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতারা সেই বছর যথাক্রমে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম স্থানে ছিল।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাময়িকী ট্যাটলারের দাবি, লন্ডনের সম্পত্তিতে চীনের ক্রেতারা আগ্রহ হারালেও যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ক্রেতাদের আগ্রহ বেড়েছে।