দেউলিয়া: নিজেদের নিয়েও চিন্তিত যুক্তরাষ্ট্র

সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক মন্দার জেরে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা। আশঙ্কা করা হচ্ছে আরও কিছু দেশ একই ভাগ্য বরণ করতে পারে। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, দেউলিয়াত্বের মুখে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখনই কিছু জরুরি পদক্ষেপ না নেওয়া হলে দেশটিকে প্রথমবারের মতো দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচানো যাবে না। খবর ওয়াশিংটন জার্নাল।

দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্র

গত সপ্তাহে হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির কাছে লিখিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানিয়েছেন জ্যানেট ইয়েলেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে তার সক্ষমতার সর্বোচ্চ পরিমাণ ঋণ নিয়ে ফেলেছে। এর ফলে যে কোনো মুহূর্তে দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটি। আর সত্যি সত্যি তা হলে এতে প্রভাবিত হবে পুরো বিশ্ব। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ জরুরি কিছু উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে।

ম্যাাকার্থির কাছে পাঠানো চিঠিতে ইয়েলেন আরও বলেন, জরুরি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার থেকে সব ঋণ কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ শুরু হয়েছে। আগামী ৫ জুন পর্যন্ত এ স্থগিতাদেশ চলবে। উল্লেখিত সময়ে অর্থ বিভাগ সিভিল সার্ভিসের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং প্রতিবন্ধী তহবিলের অংশও পুরোপুরি বিনিয়োগ করতে পারবে না। আবার ট্রেজারি বিভাগ পোস্টাল সার্ভিসের অবসরপ্রাপ্তদের স্বাস্থ্য সুবিধা তহবিলে পরিমাণের অতিরিক্ত বিনিয়োগের বিষয়টিও স্থগিত করবে।

জ্যানেট ইয়েলেন

মার্কিন অর্থমন্ত্রী এর আগে কংগ্রেসকে জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন দেউলিয়াত্বের একবারে কাছাকাছি পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তাই তিনি অবিলম্বে ঋণ সীমা বাড়ানো বা স্থগিত করার জন্য একটি সময়োপযোগী পদ্ধতি অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এ সময় তিনি সতর্ক করে বলেন, কংগ্রেস এটি করতে ব্যর্থ হলে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক সমস্যা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তার এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে হোয়াইট হাউজ গত শুক্রবার কংগ্রেসকে ‘শর্ত ছাড়াই’ ঋণের সীমা বাড়াতে বলে।

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পরিমাণ ঋণ নিয়ে নিয়েছে- এর অর্থ হচ্ছে, কংগ্রেস যুক্তরাষ্ট্রকে দেশি-বিদেশি ঋণ নেওয়ার যে সীমা বেঁধে দিয়েছিল তা প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে। ফলে এখন দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার। গত ২৫ বছর ধরে অর্থাৎ ১৯৯৭ থেকে দেশটি প্রায় প্রতি বছরই ঋণ নেওয়ার সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃদ্ধি করে গেছে। ফলে দেশটির ঋণ দিন দিন আকাশ ছুঁয়েছে।

হোয়াইট হাউজের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলছেন, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ঋণের সীমা বাড়ানোর জন্য কংগ্রেস নতুন একটি বিলের জন্য আলোচনাকে অগ্রাধিকার দেবে।