২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে বিবিসির তৈরি তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে আগেই। এবার এটি দেখা বন্ধ করতে নিজেদের ছাত্র সংসদের কার্যালয়ে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) কর্তৃপক্ষ।
বিবিসির ডকুমেন্টারি দেখছে জেএনইউর শিক্ষার্থীরা
এর আগে গত রোববার কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ইউটিউব ও টুইটারকে বিবিসির তথ্যচিত্রের লিঙ্ক তুলে নিতে নির্দেশ জারি করা হয়। এর পাশাপাশি আইটি রুলস ২০২১-এর জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করে ৫০টির মতো টুইট তুলে নেওয়ার জন্যও কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফ তেকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন। এ ছাত্র সংগঠনে বামপন্থী ডিএফএফ, আইসা, এসএফআই ও এআইএসএফের সদস্যরা আছেন।
গত সোমবার জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ কড়া ভাষায় জানিয়েছিল, ওই তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কারণ এই ধরনের অননুমোদিত কার্যকলাপ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সম্প্রীতি বিঘ্নিত করতে পারে। তবে ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে সেই আশঙ্কা খারিজ করে দেওয়া হয়।
বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেটবিহীন অবস্থায় জেএনইউর শিক্ষার্থীরা
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, তারা যাতে বিবিসির তথ্যচিত্র দেখতে না পান, সেজন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই তথ্যচিত্র দেখতে শেষ পর্যন্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যান্টিনে যান। সেখানেই তারা তাদের মোবাইলে তথ্যচিত্রটি দেখতে থাকেন। তখন তাদের বাধা দিতে ক্যান্টিনেও বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে তাদের ওপর ঢিল পড়তে থাকে।
জেএনএউ ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষ অভিযোগ করেন, পাথরের আঘাতে তাদের এক সদস্য আহত হয়েছেন। তবে পাথর ছোড়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
ভারতের সরকারবিরোধীরা অভিযোগ করছে, ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গায় মোদির প্রশ্নবিদ্ধ ‘ভূমিকা’ তুলে ধরার কারণেই কেন্দ্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে বিবিসির তথ্যচিত্র।
এদিকে মহাত্মা গান্ধীর হত্যাদিবসে ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’ তথ্যচিত্রটি লন্ডন, এডিনবার্গ, ম্যাঞ্চেস্টার, কভেন্ট্রি ও শেফিল্ডে দেখানোর পরিকল্পনা করেছে এসএফআইয়ের ব্রিটেন শাখা ।