‘নির্যাতনের ভয়াবহতার বর্ণনা’ দিলেন আফগান শরণার্থীরা

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান বাহিনী আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর হাজার হাজার মানুষ দেশ ছেড়েছিল। ইরান সীমান্ত দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার প্রচেষ্টায় অনেকেই তুরস্কে প্রবেশের চেষ্টা করে। এখনও আফগান ছাড়ছেন অনেকে। তবে এখন যারা তুরস্কে প্রবেশের চেষ্টা করছে, তারা তুরস্ক কর্তৃপক্ষের ভয়ঙ্কর আচরণের শিকার হচ্ছেন। আমু টিভির খবর।

আফগান শরণার্থী, ফাইল ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্নাতক আফগান নাগরিক আব্দুল সবুর জানান, এক মাস আগে তিনি চাহার বুরজক ক্রসিং দিয়ে আফগানিস্তান ছেড়েছিলেন। তিনি ইরান অতিক্রম করে তুরস্কের সীমান্তে প্রবেশ করেন। কিন্তু তাকে আটক এবং পরে নির্বাসিত করা হয়। দুই সপ্তাহ আগে তিনি দেশে ফিরেছেন।

সবুর অভিবাসীদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের কথা জানিয়েছেন। ইরানের সীমান্ত কর্মকর্তারাদের খারাপ ব্যবহার ও তুর্কি কর্তৃপক্ষের করা নির্যাতনের বর্ণনা দেন তিনি। আফগান অভিবাসীরা মানব পাচারকারীদের হাতে পড়ার ঝুঁকিও রয়েছে। তিনি বলেন, কিছু সন্ত্রাসী গ্রুপ অভিবাসীদের ফোন, টাকা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়।

সবুরের দাবি, তুরস্ক সীমান্তের চেয়ে বেশি নিপীড়ন ও ভয়াবহতা আর কোথাও নেই। তুর্কি পুলিশ যারা অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে, সবাইকে মারধর করে। এমনকি প্লাস দিয়ে দাঁত টেনে তোলা কিংবা হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়ার মতো ভয়াবহ নির্যাতন চালায় তারা।

এক বর্ণনায় সবুর বলেন, তারা ৮০ জন ছিলেন, যার মধ্যে ৪০ জনকেই বেদম মারধর করা হয়। মারতে মারতে সবাইকে আধমরা করে ফেলে। পুলিশ হাত দিয়ে মানুষের গোঁফ টেনে তোলো। দাঁতে দাঁত খিঁচিয়ে দেয়। এমনকি মানুষের হাত-পা ভেঙ্গে ছেড়ে দেয়।

অন্যান্য অভিবাসী যারা দেশে ফিরে এসেছে তারাও তুরস্ক সীমান্তে একইরকম নির্যাতনের কথা জানিয়েছে। আরেক অভিবাসী সখী সাদেকী নিষ্ঠুরতা ও সহিংসতার ভয়াবহ কাহিনী শেয়ার করেন।

সখী সাদেকী জানান, তারা ২০ জন ছিলেন। তুর্কি সীমান্ত পুলিশ ছুরি দিয়ে অভিবাসীদের শরীরে আঘাত করে এবং আমাদের ইরানে ফেরত পাঠায়। ইরানের বাহিনী বন্দিদের এক দিন এবং এক রাতে ঠান্ডা তুষারময় আবহাওয়ায় বাইরে ফেলে রেখেছিল। ১০ দিন পর্যন্ত কোনো খাবার দেয়নি। প্রচণ্ড শীতে কম্বলও দেওয়া হয়নি।

আফগানিস্তানের লাঘমান প্রদেশের বাসিন্দা ইসমাতুল্লাহ আফগান শরণার্থীদের তুর্কি সীমান্তরক্ষীদের দ্বারা নির্যাতিত হতে দেখেছেন। তিনি বলেন, এই রক্ষীরা অভিবাসীদের কক্ষে প্রচণ্ড মারধর করে। হাত-পা ভেঙ্গে ইরানের মাটিতে ফেলে রাখে তারা।