আপনি পড়ছেন

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানিতে (বাপেক্স) প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে বলে জানা গেছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায় এ দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। বলা হচ্ছে, এ অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই জড়িত।

bapexবাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি

অডিট অধিদপ্তর বলছে, বাপেক্সে ২১টি পৃথক খাতে মোট ৬৪১ কোটি ৭৯ লাখ ৫৫ হাজার ৬ টাকার আর্থিক অনিয়ম হয়েছে।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এসব অনিয়মের জবাব চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে অডিট অধিদপ্তর। এ প্রসঙ্গে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন বলেন, আমাদের হিসাব বুঝতে পারেনি অডিট কমিটি। তারা না বুঝে আপত্তি তুলেছে। আমরা মন্ত্রণালয়ের কমিটির কাছে জবাব দিয়েছি।

দেশের একটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির (এসজিসিএল) কাছে কম দামে গ্যাস বিক্রি করায় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বাপেক্সের। এরমধ্যে ২০১৯ সালে গ্যাস বিক্রির ক্ষেত্রে বাপেক্সের ওয়েলহেড মার্জিন ঘনমিটারপ্রতি ৩ দশমিক ০৪১৪ টাকা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

কিন্তু এই আদেশ না মেনে বাপেক্সেকে ঘনমিটারপ্রতি শূন্য দশমিক ৬৭ এবং শূন্য দশমিক ৬২৯৭ টাকা দিয়েছে এসজিসিএল। এতে প্রতি ঘনমিটারে ২ দশমিক ৩৭১৪ টাকা ও ২ দশমিক ৪১১৭ টাকা করে ক্ষতি হয়েছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এ ক্ষতির মোট পরিমাণ ৪৫৩ কোটি ৯ লাখ ৩ হাজার ৩৭৬ টাকা।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাপেক্সের গ্যাস সরবরাহেও অনিয়ম ধরা পড়েছে। বাপেক্সের সরবরাহকৃত গ্যাসের পরিমাণ কম দেখিয়ে মার্জিন মূল্য বাবদ ৪৪ কোটি ৯ লাখ ৪৫ হাজার ৩১৩ টাকা লুটপাট করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে এসজিসিএল ও বাপেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত বলে জানা গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সালদা নদী, শ্রীকাইল ও ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাস ফিল্ড থেকে ১৭১ কোটি ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ৩০৬ ঘনমিটার গ্যাস জিটিসিএলকে সরবরাহ করেছে বাপেক্স। এর মধ্যে সালদা নদী ও শ্রীকাইলের গ্যাস তিতাস গ্যাস কোম্পানি এবং ফেঞ্চুগঞ্জের গ্যাস বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির কাছে বিতরণ করে  জিটিসিএল।

কিন্তু বিতরণ হিসাব বলছে, প্রাপ্ত গ্যাসের পরিমাণ ১৫৭ কোটি ৬৬ লাখ ৯৭ হাজার ২৭৩ দশমিক ২১ ঘনমিটার। সরবরাহের চাইতে ১৪৪ কোটি ৯৮ লাখ ১ হাজার ৩২ দশমিক ৭৯ ঘনমিটার কম। এই পরিমাণ গ্যাসের মার্জিনের পরিমাণ ৪৪ কোটি ৯ লাখ ৪৫ হাজার ৩১৩ টাকা।

এছাড়া অনুসন্ধান ও উৎপাদন ভাতা (এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন অ্যালাউন্স) প্রদানের নামে লুটপাট হয়েছে ৩ কোটি ৯২ লাখ ৪৮ হাজার ৭৮০ টাকা। যদিও প্রতিষ্ঠানটিতে অনুসন্ধান ও উৎপাদন ভাতা বলে কিছু নেই। এ টাকা বাপেক্সের কোষাগারে ফেরত দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে।

এ ছাড়া অলাভজনক ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পে বিনিয়োগ করে ঋণ ও সুদ বাবদ বছরে ২০ কোটি ৫৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে বাপেক্সকে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.