অগ্রগতি ছাড়াই মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ করলেন ব্লিঙ্কেন!
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কোনো অগ্রগতি ছাড়াই মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ করলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ইসরায়েলের অধিকৃত পশ্চিম তীরে দুই দিনের সফর শেষ করে গেল মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের দেখা করেন তিনি। খবর আরব নিউজ।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস
এ সময় উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানান ব্লিঙ্কেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নতুন কোনো উদ্যোগের প্রস্তাব দেননি তিনি। তার এ সফর ঘিরে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনায় আশেপাশের বিষয়গুলো মোকাবেলায় কোনো পদক্ষেপ নেই বললেই চলে।
বৈঠকে বর্তমান সহিংসতার জন্য সমস্ত দোষ ইসরায়েলের ওপর চাপিয়েছেন আব্বাস। সেই সঙ্গে ইসরায়েলি সকারের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো চাপ না দেওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তিরস্কার করেছেন তিনি। গেল ২৯ জানুয়ারি আব্বাসের সঙ্গে দেখা করেন ব্লিঙ্কেন এবং সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস।
গেল সপ্তাহে জেরুজালেমের একটি সিনাগগের বাইরে ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী গুলিতে সাতজনকে হত্যার ঘটনায় অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান ব্লিঙ্কেন।
সেই সঙ্গে বৈঠকে ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার 'দ্বি-রাষ্ট্র' নীতিকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ না নিতে উভয় পক্ষকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন ব্লিঙ্কেন।
ইসরায়েলের এমন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছেন ব্লিঙ্কেন। আর এর ফলে 'দ্বি-রাষ্ট্র' সমাধানে বাধা সৃষ্টি করে বলে মনে করে ওয়াশিংটন। বিশেষ করে, বন্দোবস্তি সম্প্রসারণ, (বন্দোবস্ত) ফাঁড়ির বৈধকরণ, ধ্বংস এবং উচ্ছেদ, পবিত্র স্থানগুলোর মর্যাদায় রক্ষা, সহিংসতার প্রতি উসকানির কথা তুলে ধরেন তিনি।
আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘে অতিরিক্ত ৫০০ কোটি ডলার প্রদান করবে। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ফোর-জি পরিষেবা সরবরাহ করার জন্য ইসরায়েলি সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে।
আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এমন কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আব্বাস। তিনি ফিলিস্তিনিদের দীর্ঘদিনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে তাদের ভূখণ্ডের দখল বন্ধ করতে বলেন ইসরায়েলকে।
ফিলিস্তিনি নেতারা ব্লিঙ্কেনকে বলেছে, যদি শান্তি পুনরুদ্ধার করতে হয় তাহলে ইসরায়েলকে অবশ্যই পশ্চিম তীরে বসতি নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। ফিলিস্তিনি শহরে ইসরায়েলি সেনাদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের ওপর বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা আক্রমণ ও সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে।
এদিকে ফাতাহ নেতা মাহমুদ আল-আলউল বলেছেন, আমেরিকান নীতির প্রতি ফিলিস্তিনিদের আর আস্থা বা আশা নেই। কারণ এটি কেবল ইসরায়েলি দখলদারিত্ব রক্ষা ও সমর্থনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাজদি হালাবি আরব নিউজকে বলেছেন, ব্লিঙ্কেনের সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর প্রচেষ্টায় অবদান রাখবে।
হালাবি আরও বলেন, ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে ফিলিস্তিনিদের আক্রমণ ঠেকাতে পারবেন না আব্বাস। কারণ তিনি লায়ন্স ডেন গ্রুপকে প্রভাবিত করতে পারেন। এতে ফাতাহ সংগঠনের প্রভাব রয়েছে, যার প্রধান তিনি।
তবে পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ধ্বংস বন্ধ, ফিলিস্তিনিদের গ্রেপ্তার কমাতে এবং বসতি সম্প্রসারণ সীমিত করতে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এমনটা মনে করেন হালাবি।
তিনি বলেন, ওয়াশিংটন চাইলেই এটা করতে পারে। কারণ ইরানকে মোকাবিলায় ইসরায়েলকে আর্থিক সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র।
ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাবিল আমর বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কেবল উভয় পক্ষকে পরামর্শ দিতে পারে। শান্ত থাকা এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানে প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে কথা বলতে পারে। কিন্তু তারা সেটি না করে ফিলিস্তিনিদের উপর বারবার চাপ প্রয়োগ করছে।
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.