এরদোয়ান: এক বছরের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পুনর্নির্মাণ করবো

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ভূমিকম্প এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আমাদের নাগরিকদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা কখনোই তাদের আশ্রয়হীন থাকতে দেব না। এক বছরের মধ্যেই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পুনর্নির্মাণ করবো। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ক্ষতিগ্রস্ত এক নারীকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন এরদোয়ান

এরদোয়ান বুধবার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শনের সময় এসব কথা বলেন। এর আগের দিন তিনি দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি প্রদেশে তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। এরদোয়ান জানান, তিনি তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকত এবং মন্ত্রিসভার সব মন্ত্রীকে পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং দুর্গত এলাকায় সমন্বয় প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব দিয়েছেন।

সফরের প্রথম পর্যায়ে এরদোয়ান কাহরামানমারাসের ওনিকিসুবাত জেলার একটি ফুটবল স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন, যেখানে সোমবার আঘাত হানা দুটি বড় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ সময় এরদোয়ান বলেন, এক বছরে আমরা এই ১০টি প্রদেশ পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা করছি। আমরা এতে সফল হবো, কারণ আমরা আগেও এমন কাজ করেছি।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর বক্তব্য দিচ্ছেন এরদোয়ান

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, তার সরকার আন্তালিয়া, আলানিয়া ও মেরসিনের হোটেলগুলোতে ক্ষতিগ্রস্তদের থাকার ব্যাপারে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাদের এই শহরগুলোর হোটেলগুলোতে রাখতে যাচ্ছি। এ সময় তিনি জানান, আপাতত সরকার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ১০ হাজার তুর্কি লিরা (৫৩১ ডলার) করে প্রদান করবে।

এ সময় এরদোয়ান দৃঢ়তার সাথে বলেন, আমাদের নাগরিকদের আশ্বস্ত করছি, আমরা কখনোই তাদের আশ্রয়হীন থাকতে দেব না। এ সংকট মোকাবেলায় আমরা আমাদের সমস্ত শক্তিকে একত্রিত করেছি। রাষ্ট্র, পৌরসভা, দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা প্রেসিডেন্সি সবাই এক সাথে কাজ করছে।

পরে তুর্কি প্রেসিডেন্ট কাহরামানমারাস প্রদেশে ত্রাণ প্রচেষ্টা পরিদর্শন করেছেন। ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই প্রদেশটি। এটিসহ ১০টি প্রদেশের সোয়া এক কোটির বেশি মানুষ এ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুরস্কে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই ভূমিকম্পে।

তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (এএফএডি) জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ৯৬ হাজার ৬৭০ জনের বেশি উদ্ধারকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। দেশটির সামরিকবাহিনী এবং বিশেষ অভিযান বাহিনীর সদস্যরা অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। এছাড়া ত্রাণ তৎপরতায় সহায়তার জন্য বেসরকারি সংস্থা, ব্যক্তিসহ স্বেচ্ছাসেবকদেরও এই অঞ্চলে মোতায়েন করা হচ্ছে। এরইমধ্যে কয়েক ডজন দেশ দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে।

ত্রাণ সংস্থাগুলো এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করার জন্য প্রায় ৫১ হাজার তাঁবু স্থাপন করে ঘরবাড়িহীন ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। তুর্ক কিজিলে, তুর্কি রেড ক্রিসেন্ট এবং অন্যান্য বেসামরিক সংস্থা দুর্গত লোকজনের জন্য কম্বল, খাবারসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রদান করেছে।