মধ্যরাতে প্যারিসে জেলেনস্কি, মস্কোতে পুতিনের জরুরি বৈঠক

রাশিয়াকে যুদ্ধে জিততে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করেছেন ফ্রান্স ও জার্মানির নেতারা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘোষণা দেন। বুধবার মধ্যরাতে ব্রিটেন থেকে ফ্রান্স পৌঁছান জেলেনস্কি। একই সময়ে মস্কোতে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে প্যারিসে ইউক্রেন, ফ্রান্স ও জার্মানির নেতাদের সংবাদ সম্মেলন

রাশিয়ার প্রচারমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বুধবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। এর আগে কখনো রাতে এ পরিষদের বৈঠক হয়নি। ইউরোপে জেলেনস্কির ঝটিকা সফরের দিনে পুতিন এ বৈঠক করলেন। যদিও এ বৈঠকে ইউক্রেন প্রসঙ্গে আলোচনার কোনো খবর রুশ গণমাধ্যমে আসেনি।

তাস জানিয়েছে, পুতিন প্রতি সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বুধবার রাতের বৈঠকে কেবল অগ্নি দুর্ঘটনা ও বন্যা ব্যবস্থাপনা এবং অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে কথা হয়েছে। বৈঠকে প্রেসিডেন্টের সহযোগী ইগর লেভিতিন, প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই বেলুসভ, রাশিয়ান রেলওয়েজ সিইও ওলেগ বেলুজিয়রভ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী আলেক্সান্ডার কুরেনকভ তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিসুতসিন, পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের সভাপতি ভ্যালেন্টিনা মেতভিয়েঙ্কো, নিম্নকক্ষের স্পিকার ভ্যাচেস্লাভ ভলোদিন, নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ, ক্রেমলিনের চিফ অব স্টাফ আন্তন ভাইনো, পরিষদের সেক্রেটারি নিকোলাই পেট্রুশেভ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্লাদিমির কলোকলতসেভ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু, ফেডারেল গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আলেক্সান্ডার বরতনিকভ, বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান সের্গেই নারিয়াশকিন ও প্রেসিডেন্টের পরিবেশ বিষয়ক দূত সের্গেই ইভানভ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে একই সময়ে ব্রিটেনের সাউদাম্পটন থেকে প্যারিস পৌঁছান ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার কিছুক্ষণ আগে ফ্রান্সের রাজধানীতে পৌঁছান জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ। পরে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁসহ তিন নেতা ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন।

বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মাখোঁ বলেন, আমরা ইউক্রেনকে সমর্থন করি এবং ইউক্রেনকে বিজয়ের পথে নিয়ে যাব। রাশিয়াকে এ যুদ্ধ জিততে দেওয়া হবে না। ওলাফ শোলজ তার বক্তব্যে বলেন, ইউক্রেনের যত অস্ত্র দরকার আমরা সরবরাহ করব।

জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় পরিবর্তন এনে দিতে পারে ফ্রান্স ও জার্মানি, যদি তারা আমাদের আরও ট্যাঙ্ক, যুদ্ধবিমান ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে। আমি আজ ব্রিটেনের কাছে যুদ্ধবিমান চেয়েছি। এ বিষয়ে ফ্রান্স ও জার্মানির নেতাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। আমরা স্বাধীন থাকতে চাই। আমাদের ডানা দরকার, আপনারা তা দিতে পারেন।

প্যারিস থেকে জেলেনস্কি আজ ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-ইউক্রেন সম্মেলনে যোগ দেবেন। এ সম্মেলনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের পক্ষে ইইউর অবস্থানের প্রমাণ বলে মন্তব্য করেছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।