‘অনুগত’ বেসামরিক নাগরিকদের অস্ত্র দেবে জান্তা

সামরিক শাসিত রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত নাগরিকদের আগ্নেয়াস্ত্র বহনের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করার অনুমতি দেবে মিয়ানমার সামরিক জান্তা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি সরকারি নথি ফাঁস হয়েছে। সেই নথিতে এ কথা বলা হয়েছে। এএফপির খবর। 

অস্ত্র হাতে বিদ্রোহী সদস্য, সামরিক জান্তা মিন অং হ্লাইং

নথিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ফাঁস হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রয়টার্স নথিটি পর্যালোচনা করেছে। পর্যালোচনায় জানা গেছে, যারা বন্দুকের লাইসেন্স চাইছে তাদের জন্য একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে জান্তা সরকার।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের প্রায় দুই বছর পরও জান্তা সরকার দেশব্যাপী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) এবং জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ক্রমবর্ধমান প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, বেসামরিক লোকদের বন্দুক বহন করার অনুমতি দেওয়া জান্তাপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে শক্তিশালী করবে এবং তাতে শুধুই সহিংসতা বৃদ্ধি করবে। সামরিক ও সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনীর মধ্যে প্রায় প্রতিদিন সংঘর্ষ হচ্ছে, যা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।

ওই নথির শর্তগুলোতে বলা হয়েছে, আনুগত্যের স্বার্থে ১৮ বছর বয়স থেকে যে কেউ অস্ত্রের লাইসেন্স পাবে। তবে এই আইন কখন কার্যকর হবে তা স্পষ্ট নয়। ১৫ পৃষ্ঠার নথিটি সম্পূর্ণ যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। সামরিক মুখপাত্র এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।

সামরিক জান্তা বিরোধীরা নতুন নীতির নিন্দা করেছেন। নতুন নীতিটি প্রয়াত স্বৈরশাসক জেনারেল নে উইনের নেতৃত্বে সামরিক শাসনামলে ১৯৭৭ সালে প্রবর্তিত নীতির অনুরূপ বলে মনে করা হচ্ছে। পরবর্তীকালে ১৯৮৮ সালের গণতন্ত্রপন্থীদের বিদ্রোহের পর নীতিটি বন্ধ হয়ে যায়।

মার্কিন ভিত্তিক সংঘাত পর্যবেক্ষণকারী গ্রুপ একলেড জানিয়েছে, গত বছর প্রায় ১৯ হাজার লোক মারা গেছে। কারণ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের ফলে অনেকে জান্তার বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলেছিল।

যুদ্ধে প্রায় ১২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ৭০ হাজারের বেশি মানুষ দেশ ছেড়েছে, জাতিসংঘের মতে, মিয়ানমার সামরিক বাহিনী যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে।