আপনি পড়ছেন

ইউক্রেনে এখনও হামলা অব্যহত রেখেছে রাশিয়া। এতে জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলো। রাশিয়াকে দুর্বল করার মোক্ষম সুযোগ পেয়ে গেছে, এমন ভাবনা থেকেই ইউক্রেনের পেছনে এসে দাঁড়ায় তারা। মানবিক সহায়তার পাশাপাশি সামরিক সহায়তা দিয়ে ইউক্রেনকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে উৎসাহ যোগায়। তবে বছর শেষে এসে দেখা যাচ্ছে, রাশিয়া নয়, বরং ইউক্রেনের মিত্ররাই নানাবিধ সংকটে পড়েছে। খবর ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

ukraine russia war 4রাশিয়ার কৌশলে ধরা পশ্চিমা বিশ্ব

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। শুরুতে তুলনামূলক ধীরগতিতেই হামলা চালায় ক্রেমলিন। এতে অনেকে রাশিয়াকে দুর্বল ভাবতে শুরু করে। বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব মনে করেছিল, আসলে রাশিয়া যতই হম্বিতম্বি করুক না কেন, তাদের ভেতরটা আসলে ফাঁকা। একটু জোর ধাক্কা দিলেই রাশিয়া ধসে পড়বে, এমন ধারণা তৈরি হয় ইউক্রেনের মিত্রদের মনে। এই ধারণা আরও মজবুত করতে নানা কৌশল নেয় যুক্তরাষ্ট্র।

তেল-গ্যাসের জন্য ইউরোপের অধিকাংশ দেশ রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল হলেও তাৎক্ষণিক বিবেচনা ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে অনেক দেশই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে, দেশটির ওপর নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ইউক্রেনকে সাধ্যের বাইরে গিয়ে সামরিক সাহায্য সহায়তা দেয়। কিছু দেশ তার সমস্ত অস্ত্রই দিয়ে দেয় ইউক্রেনকে। কোনো কোনো দেশ অস্ত্র কিনে ইউক্রেনকে সহায়তা করতে থাকে। এভাবে সাহায্য করতে গিয়ে ইউরোপের ছোট অর্থনীতির দেশগুলো সামরিক ও আর্থিক উভয় খাতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক দেশের অস্ত্রাগার শূন্য হয়ে পড়েছে। মূলত রাশিয়ার সমরকৌশলের কাছে পরাজিত হওয়ার পথে ইউক্রেনের শক্তিশালী মিত্ররা।

us arms in ukraine 10ইউক্রেনে বিদেশি অস্ত্র

সম্প্রতি ইউরোপের দেশগুলোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের এক বৈঠকে এমন উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন তাদের সামরিক কর্মকর্তারা। তারা জানান, অবস্থা যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে ইউক্রেনকে দেওয়ার মতো বিশেষ কিছু নেই। গুদাম ও অস্ত্রাগারগুলো প্রায় শূন্য হয়ে গেছে। প্রায় এক বছরের যুদ্ধে পশ্চিমা সরকারগুলো ইউক্রেনকে ১১০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ সহায়তা দিয়েছে, যার মধ্যে অস্ত্র সহায়তার পরিমাণ ছিল ৩৮ বিলিয়ন ডলার।

ইউক্রেনের মিত্র তথা ন্যাটোর সদস্য দেশগুলো এখন এ নিয়ে উদ্বেগে ভুগছে। অথচ এখন শঙ্কা রয়েছে রাশিয়া তার হামলার বর্ষপূর্তি কিভাবে পালন করে। ন্যাটো আশঙ্কা করছে, অভিযান শুরু হলে দৈনিক যে পরিমাণ কামানের গোলা রুশ বাহিনী ছুঁড়বে, তা ইউরোপের এক মাসের উৎপাদনের সমান।

রাশিয়া শুরুতে যে সব অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছিল, তা ঠেকাতে ইউক্রেনের অস্ত্রই যথেষ্ট ছিল। ফলে অনেকেই সে সময় রাশিয়াকে দুর্বল মনে করেছিল। কিন্তু দিন যতই যাচ্ছে, পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। ইউক্রেন এখন তাই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র, শক্তিশালী ট্যাংক চাইছে। ফলে এতদিন ইউক্রেনের আবদার পূরণ করলেও এখন সময় পাল্টেছে। যুক্তরাষ্ট্রও অনেক সময় জবাব দিতে বাধ্য হচ্ছে, ইউক্রেনের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। কারণ এতে কেবল অস্ত্র, প্রযুক্তি, অর্থই জড়িত নয়, বিশ্বজুড়ে এ সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

এক বছরের যুদ্ধে দুই পক্ষের লক্ষাধিক লোকের প্রাণহানি হয়েছে।  এক কোটির বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়ে গেছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। বিপুল পরিমাণ এই শরণার্থীর পরিপালনের বিষয়টিও ক্রমাগত চেপে বসেছে আশ্রয়দাতা দেশগুলোর ভঙ্গুর অর্থনীতিতে।

ইউরোপের দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জ্বালানি খাতে। রাশিয়া থেকে যে পরিমাণ এবং দামে জ্বালানি পাওয়া যেত, তার বিকল্প আবিষ্কার করতে পারেনি তারা। ইউরোপসহ পুরো বিশ্বে মূল্যস্ফীতির উল্লম্ফনে এ বিষয়টি ব্যাপকভাবে অবদান রেখেছে। অনেক দেশ দেউলিয়াত্বের কাছে চলে গেছে। অথচ বিভিন্ন ফাঁক-ফোকর বের করে রাশিয়ার অর্থনীতি আগের মতোই সচল রয়েছে।

সমরবিদরা মন্তব্য করেছেন, বড় একটি সমস্যার মুখে পড়েছে রাশিয়ার প্রতিপক্ষ ইউক্রেনের মিত্ররা। আর তা হলো রাশিয়া এক বছরের বেশি সময় ধরে যুদ্ধকালীন অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। সামরিক ব্যবস্থাপনাতেও দক্ষ হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে ইউরোপ কেবল সেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.