আপনি পড়ছেন

আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের আজকের দিনে মাতৃভাষা বাংলার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন রফিক, সালাম, বরকতসহ বেশ কয়েকজন অকুতোভয় বাঙালি। তারা নিজেদের প্রাণ দিয়ে আমাদের জন্য মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার আদায় করে গেছেন। পৃথিবীর সব মানুষ তার নিজ নিজ মাতৃভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে। নবী-রাসুলদের সময়ও মাতৃভাষার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। যুগ যুগ ধরে মানুষ তার নিজ নিজ মাতৃভাষায় দ্বীন প্রচার করে গেছেন। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে অনেকবারই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

banglaদ্বীন প্রচারের ক্ষেত্রেও মাতৃভাষার গুরুত্ব অপরিসীম

ভাষা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সূরা আর-রহমানে বলা হয়েছে, ‘দয়াময় আল্লাহ, তিনিই কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন, তিনিই মানুষ সৃষ্টি করেছেন, তিনিই তাকে ভাব প্রকাশ করতে শিখিয়েছেন।’ আবার সূরা রুমে আল্লাহ বলেছেন, ‘আর তাঁর নির্দেশনাবলির মধ্যে রয়েছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। নিশ্চয়ই জ্ঞানীদের জন্য এতে রয়েছে বহু নিদর্শন।’

এ ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়েই আল্লাহর প্রেরিত নবী-রাসূলগণ দ্বীন প্রচার করতেন। মহান রাব্বুল আলামীনের বাণী প্রচার করতেন। এক্ষেত্রে তারা কোনো ভিনদেশি ভাষা ব্যবহার করতেন না। বরং তারা নিজ নিজ মাতৃভাষাতেই মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দিতেন।

amar ekusheমাতৃভাষা বাংলার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন অকুতোভয় বাঙালিরা

এ ব্যাপারে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরা ইবরাহিমে বলেছেন, ‘আর আমি প্রত্যেক রাসুলকে পাঠিয়েছি তার স্বজাতির ভাষাতেই, যাতে তিনি তাদের কাছে বিস্তারিত বর্ণনা দিতে পারেন।’ হাদিস শরিফেও বলা হয়েছে, আল্লাহ প্রত্যেক নবী-রাসূলকে নিজ নিজ স্বজাতির ভাষায় প্রেরণ করেছেন।’

নবী-রাসূলরা ছিলেন তাদের মাতৃভাষায় পাণ্ডিত্যের অধিকারী। বিশুদ্ধ ও আলংকারিক ভাষার কৃতিত্বধারী ছিলেন তারা। যাতে তাদের উম্মতরা তাদের কথা পুরোপুরি বুঝতে পারে। ভাষা সম্পর্কে উচ্চজ্ঞান না থাকলে তারা সঠিকভাবে দ্বীন প্রচার করতে সক্ষম হতেন না।

অনেকেই ধারণা করেন, সব নবীদের ভাষাই ছিল আরবি। মূলত বিষয়টি তা নয়। বরং নবীরা যে জায়গায় জন্মগ্রহণ করেছেন, সেখানকার ভাষাই ছিল তাদের দ্বীন প্রচারের মাধ্যম। বিভিন্ন ঐতিহাসিক বর্ণনায় প্রসিদ্ধ নবী-রাসূলদের মাতৃভাষা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সে অনুযায়ী-

পৃথিবীর প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী হযরত আদম (আ.) জান্নাতে থাকাকালে আরবি ভাষায় কথা বলতেন। তবে পৃথিবীতে আগমনের পর তিনি সিরিয়াক ভাষায় কথা বলেন। হযরত নুহ, শিশ, ইউনুস ও ইদরিস (আ.)-ও সিরিয়াক ভাষায় কথা বলতেন। হযরত হুদ ও সালিহ (আ.) আরবি ভাষায় কথা বলতেন। হযরত ইবরাহিমের (আ.) মাতৃভাষা ছিল সিরিয়াক। তবে তিনি আরবি ভাষাতেও সমান পারদর্শী ছিলেন।

হযরত লুত ও ইয়াকুব (আ.) সিরিয়াক ও আরবি উভয় ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। হযরত ইসমাইল, আইয়ুব ও শোয়াইব (আ.) কথা বলতেন আরবি ভাষায়। হযরত ইউসুফ (আ.) শৈশবে আরবি ভাষায় কথা বললেও মিসরে যাওয়ার পর কিবতি ভাষায় কথা বলতেন। হযরত দাউদ ও সুলাইমান (আ.) সিরিয়াক ভাষার উপভাষা ও হিব্রুর প্রাচীনরূপ অ্যারামিক ভাষায় কথা বলতেন। তবে আরবি ভাষায়ও দক্ষ ছিলেন তারা।

হযরত মুসা ও হারুন (আ.) কিবতি ভাষায় কথা বলতেন। তবে তারা আরবি ভাষাতেও দক্ষ ছিলেন। হযরত ইউশা বিন নুন (আ.) আরবি ভাষায় কথা বলতেন। তবে প্রাচীন মিসরীয় কিবতি ভাষাও জানা ছিল তার। অ্যারামিক ভাষায় কথা বলতেন হযরত জাকারিয়া, ঈসা ও ইয়াহইয়া (আ.)। একই সাথে আরবি ভাষাতেও দখল ছিল তাদের।

মহানবী মোহাম্মদ (স.) কথা বলতেন আরবি ভাষায়। প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা গ্রহণ করা ছাড়াই তিনি আরবের সবচেয়ে বিশুদ্ধ ভাষার অধিকারী ছিলেন। তার ভাষামাধুর্য্যে মুগ্ধ হয়ে যেত সব ধরনের মানুষ।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.