পাঁচ বছর পার হলেও শুরু হয়নি আপিল শুনানি

আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশের ইতিহাসের কালো এক দিন। ২০০৯ সালের এই দিনে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) সদর দপ্তরে এক নৃশংস ঘটনা ঘটে। ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে বিপথগামী বিডিআর সদস্যরা। এরপর থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘পিলখানা হত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এই ঘটনায় ওই সংস্থার নামও পাল্টে ফেলা হয়, নাম রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, সংক্ষেপে বিজিবি।

পাঁচ বছর পার হলেও শুরু হয়নি আপিল শুনানি

দিবসটি উপলক্ষে সকালে বনানী সামরিক কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) ও শহীদদের নিকটাত্মীয়রা।

নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করবে বিজিবি ও সেনাবাহিনী। শহীদ ব্যক্তিবর্গের রুহের মাগফিরাত কামনায় কোরআন খতম, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে। বিজিবির সব জায়গায় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং এ বাহিনীর সদস্যরা কালো ব্যাজ পরিধান করবেন।

নৃশংস এ ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক নবজ্যোতি খিসা। এছাড়া বিজিবির নিজস্ব আইনে ৫৭টি মামলা দায়ের করা হয়।

২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এ মামলার রায় দেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আখতারুজ্জামান। রায়ে ৮৫০ জন আসামির মধ্যে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৭১ জনকে খালাস  দেওয়া হয়। দুই থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় ২৬৬ জনকে।

এরপর এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর আপিলের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে হাইকোর্ট। এছাড়া ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন, ১৯৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও খালাস পান ৪৯ আসামি।

হাইকোর্টের এই রায় চ্যালেঞ্জ করে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য সুপ্রিম কোর্টে আপিল ও লিভ টু আপিল করেন আসামিরা। এরপর পাঁচ বছর কেটে গেলেও ওই আপিলের শুনানি এখনও শুরু হয়নি।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, করোনা মহামারির কারণে মামলাটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। আগামী ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে। আমরা আশা করছি এই বছরের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি হবে।