খলিলের ক্রিকেটার হওয়ার পেছনে নির্যাতনের গল্প

২০১৮ সালে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) আবির্ভাব হয় খলিল আহমেদের। একই বছর ভারতের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। কিন্তু জাতীয় দলে থিতু হতে পারেননি তিনি। দেশের হয়ে ১১টি ওয়ানডে ও ১৪টি টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন এই পেসার।

খলিল আহমেদের ক্রিকেটার হওয়ার গল্পটা সহজ ছিল না

জাতীয় দলে ফেরার জন্য খলিলের মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে এবারের আইপিএল। আসরে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলবেন তিনি। দলে ভারতীয় পেসারদের মধ্যে তার ওপরই দায়িত্বটা বেশি। যেটা ঠিকঠাক পালন করতে চান ২৫ বছর বয়সী এই তারকা। গত মৌসুমের ফর্মটা টেনে আনার আশা তার।

খলিলের বাবা একজন কম্পাউন্ডার। তার স্বপ্ন ছিল ছেলে হবেন ডাক্তার। কিন্তু খলিল হয়ে গেলেন ক্রিকেটার। বাবার স্বপ্নকে ফাঁকি দিয়ে তার ক্রিকেটার হয়ে ওঠা মোটেও সহজ ছিল না। বাবা সারা দিন বাসায় না থাকায় বাজার করার দায়িত্বটা ছিল খলিলের। কিন্তু বাড়ির কাজে ফাঁকি দিতেন তিনি।

কাজ বাদ দিয়ে ক্রিকেট খেলাই ছিল তার নেশা। এ জন্য প্রতিনিয়ত বাবার বকাঝকা খেতে হতো তাকে। এমনকি মার পর্যন্ত খেতে হয়েছে। খলিলকে কখনও কখনও কোমড়ে বেল্ট দিয়েও পেটাতেন বাবা। সম্প্রতি আকাশ চোপড়ার সঙ্গে আলাপকালে ভারতীয় পেসার সেইসব দুর্বিসহ দিন তুলে এনেছেন।

সাক্ষাৎকারে খলিল বলেছেন, ‘আমার বড় তিন বোন। বাবা ছিলেন কম্পাউন্ডার। বাবা যখন চাকরিতে যেতেন তখন আমাকে বাড়ির কাজ করতে হতো। বাজার করতে যেতে হতো। কিন্তু আমি খেলতে যেতাম। বাড়ির কাজ করা হতো না। পরে মা বাবার কাছে অভিযোগ করতেন।’

খলিল যোগ করেন, ‘মায়ের অভিযোগ শুনে বাবা খুব রাগ করতেন। গালমন্দ করতেন। কারণ আমি পড়াশোনা কিংবা চাকরি করিনি। তখন বাবা আমাকে বেল্ট দিয়ে পেটাতেন। বেল্টের আঘাতের দাগ আমি শরীরে বহন করে বেরাতাম। আমার বোনরা আমার পাশে থাকতেন। সেবা করতেন।’

বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়ে ক্রিকেট খেলা সেই খলিলই এখন পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করছেন। ভারতীয় যুব দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলেছিলেন তিনি। এরপর জাতীয় দল থেকে ডাক আসে। ভারতের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে ২৮টি উইকেট আছে তার।