শিরোপা ধরে রাখার মিশনে গুজরাট

২০০৮ সালে আটটি দল নিয়ে পথ চলা শুরু হয় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল)। ওই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় রাজস্থান রয়্যালস। গতবছর আইপিলের ফ্রাঞ্চাইজি স্বত্ত পেয়ে প্রথম আসরেই বাজিমাত করে গুজরাট টাইটানস। রাজস্থানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি। ১৬তম আসরে গুজরাট মাঠে নামবে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে।

গুজরাট টাইটানসের লোগো

৩১ মার্চ উদ্বোধনী ম্যাচে গুজরাটের মুখোমুখি হবে চেন্নাই সুপার কিংস। টাইটানসরা ধরে রেখেছে তাদের গতবারের দলটাই। দুই একটা পরিবর্তনের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের পেসার লকি ফার্গুসনকে ছেড়ে দিয়েছে তারা। তাকে দলে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। যদিও এই পেসার ইনজুরির কারণে আসন্ন মৌসুমে খেলতে পারবেন না।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বহুল ব্যবহৃত কথা, ‘এখানে ফেভারিট তকমা খাটে না’। তা সত্ত্বেও যেই দলে রশিদ খানের মতো বিশ্বমানের বোলার, পান্ডিয়ার মতো কার্যকরী অলরাউন্ডার এবং ডেভিড মিলারের মতো খুনে ব্যাটার থাকে, সেই দলটাকে ফেভারিট না বলে উপায় আছে কী? তার ওপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন, তাই আইপিএলে এবার ক্রিকেট ভক্তদের নজর থাকবে টাইটানসের ওপর।

বড় তারকা

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর কাছে সবচেয়ে আরাধ্য ক্রিকেটার রশিদ খান এই দলের বড় তারকা। এ ছাড়া কেন উইলিয়ামসন এবং হারদিক পান্ডিয়াও থাকবেন এই তালিকায়।

শক্তিমত্তা

গুজরাটের শক্তির জায়গা নিশ্চয়ই সবার জানা। শর্টার ফরম্যাটে সবচেয়ে ইকোনোমি বোলার রশিদ খান তাদের শিবিরে। শুধু কী তাই, এই ফরম্যাটের অন্যতম উইকেটটেকার বোলারও তিনি। এমন অস্ত্র হাতে থাকলে যে কোনো অধিনায়কের জন্য বিষয়টা স্বস্তির। যিনি প্রয়োজনে রান আটকাতে পারেন আবার দরকারে ব্রেক-থ্রু এনে দেবেন।

শক্তির জায়গা হতে পারে গুজরাটের ব্যাটিং লাইনআপ। ওপেনিংয়ে শুভমান গিলের সঙ্গে হয়ত দেখা যাবে ঋদ্ধিমান শাহাকে। মারকুটে গিল আইপিএলের প্রস্তুতি নিয়েছেন শ্রীলঙ্কা-অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোম সিরিজে। দুটি সিরিজেই অসাধারণ পারফর্ম করেন এই ওপেনার। গুজরাটের ইনিংসের ভিত্তি তিনি গড়ে দেবেন গিল এমনটাই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।

মিডল অর্ডারে গুজরাটের ভরসা ম্যাথু ওয়েড নয়ত উইলিয়ামসন। দলটির কোচ আশিষ নেহরা হয়ত কিউই ব্যাটারের ফর্ম উপেক্ষা করবেন না। সবশেষ ইংল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পারফর্ম করেছেন তিনি। যদিও সেটা লাল বলের ক্রিকেটে। তবে রান যে ফরম্যাটেই করুক, ছন্দে থাকলে সেটা আত্মবিশ্বাস যোগায় যে কোনো ক্রিকেটারকেই। সাম্প্রতিক ফর্ম এবং অভিজ্ঞতা বিবেচনায় জায়গা হতে পারে উইলিয়ামসনের। এছাড়া গুজরাট একাদশে দেখা যেতে পারে ডেভিড মিলারকে।

দুর্বলতা

গুজরাটের বড় দুর্বলতার হতে পারে তাদের পেস বোলিং অ্যাটাক। সবশেষ মৌসুমে দলটি খেলিয়েছিল লকি ফার্গুসনকে। তার জায়গায় এবার টাইটানসরা নিয়েছে জস লিটলকে। আয়ার‌ল্যান্ডের এই পেসার আছেন ইনজুরিতে। এদিকে সবশেষ বাংলাদেশ সফরে খেলতে পারেননি লিটল। যদিও তার ইনজুরিটা বড় কিছু না, সেড়ে ওঠার কথা কয়েকদিনের মধ্যেই। তারপর টাইটানস শিবিরে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে পুরো মৌসুম খেলতে পারবেন না তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে হোম সিরিজ থাকার কারণে তাকে চলে আসতে হবে আগেভাগে।

পেস অ্যাটাকে মোহাম্মদ সামির সঙ্গী হবেন জস দয়াল এবং পান্ডিয়া। তাই পেস অ্যাটাকে কিছুটা পিছিয়ে থাকবে হার্দিক পান্ডিয়ার দল। এছাড়া দলে অলরাউন্ডার হিসেবে বলার মতো আছেন কেবল পান্ডিয়া। ওডেন স্মিথ দলে থাকলে একাদশে জায়গা নাও পেতে পারেন। কিন্তু পেস বোলিং দুর্বলতা ঢাকতে স্মিথকে খেলাতে পারে গুজরাট।

গুজরাট দল

ব্যাটার: শুভমান গিল, শিখর ভারত, ডেভিড মিলার, হৃদ্ধিমান সাহা (উইকেটরক্ষক), সাই সুদর্শন, ম্যাথু ওয়েড (উইকেটরক্ষক), কেন উইলিয়ামসন।

অলরাউন্ডার: হারদিক পান্ডিয়া (অধিনায়ক), অভিনব মানেহার, আরভিল প্যাটেল, বিজয় শঙ্কর, ওডেন স্মিথ, রাহুল তেওয়াতিয়া।

বোলার: মোহাম্মদ, সামি, দর্শন নালকান্দে, আলজারি জোসেফ, জস লিটল, নূর আহমেদ, রশিদ খান, রবিশ্রীনিবাসন সাই কিশোর, প্রদীপ সাওগান, মোহিত শর্মা, শিভম মাভি, জয়ন্ত যাদব, যশ দয়াল।