লখনৌতে প্রতীজ্ঞা পূরণ হবে রাহুলের?

পুনে সুপার জায়ান্ট দলটি গতবার মালিকানা বদলে হয়েছে লখনৌ সুপার জায়ান্ট। নতুন মালিকায় পুরোনো দলটি গত আসরে ভালই চমক দেখিয়েছে। প্রথম আসরে দলটির সাফল্য প্লে-অফ খেলা। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিযোগিতাকে গত বছর ৮ দল থেকে ১০ দলে উন্নীত করা হয়। পয়েন্ট তালিকায় সেরা তিনে থেকে গেলবার মৌসুম শেষ করে উত্তর প্রদেশের দলটি। ফ্রাঞ্চাইজিটির চোখ এবার শিরোপায়।

লখনৌ সুপার জায়ান্ট

বাংলাদেশিদের কাছে লখনৌ চমক হয়ে এসেছিল তাসকিন আহমেদ ইস্যুতে। ২০২২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আগুনে বোলিং করেন তাসকিন। অমন পারফরমেন্সের পর লখনৌর মেন্টর গৌতম গাম্ভীরের নজরে আসেন স্পিডস্টার। বাংলাদেশি পেসারকে দলে ভেড়াতে চিঠি দেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে। তবে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ সামনে থাকায় সেবার তাসকিনকে অনাপত্তিপত্র দেয়নি বিসিবি।

সুপার জায়ান্টরা গতবার এলিমিনেটরে রয়াল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর কাছে হেরে বিদায় নেয় টুর্নামেন্ট থেকে। রজত পাতিধরের ৫৪ বলে ১১২ রানের টর্নেডোতে ভর করে ব্যাঙ্গালুরু স্কোরবোর্ডে তোলে ২০৭ রান। জবাব দিতে নেমে ভালোই লড়াই করে লোকেশ রাহুলের দল। অধিনায়ক ৫৮ বলে ৭৯ রান করে দলকে জয়ের পথে রাখেন। রাহুল আউট হলে শেষ দিকে ১৮ বলে ৪১ রানের জয়ের সমীকরণ মেলাতে পারেনি কেউ।

ম্যাচ হেরেও রাহুল প্রশংসায় ভাসিয়েছেন দলের সবাইকে। নতুন ফ্রাঞ্চাইজি হিসেবে ভালো খেলেছে বলে স্বীকার করেন তিনি। তারুণ্যে ভরা দল নিয়ে পরেরবার ফিরে আসার প্রতীজ্ঞা ব্যক্ত করেন। এভিন লুইস আর দুসমন্ত চামিরাকে ছেড়ে দিয়েছে। তা ছাড়া আগের দলটিই ধরে রেখেছে তারা। এবার তাই রাহুলদের সামনে প্রতীজ্ঞা পূরণের মিশন।

বড় তারকা

সুপার জায়ান্টদের বড় তারকা কুইন্টন ডি কক। প্রোটিয়া ব্যাটার দুর্দান্ত ফর্মে আছেন। এ ছাড়া দলটির অন্যতম তারকা তাদের অধিনায়ক রাহুল। তার সঙ্গে আছে নিকোলাস পুরান।

শক্তিমত্তা

লখনৌর বড় শক্তি তাদের ওপেনিং জুটি। রাহুলের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে দেখা যাবে ডি কককে। এই জুটিকে আইপিএলের অন্যতম সেরা ওপেনিং জুটির তালিকায় রাখতে হবে। শুরুতে ধীরস্থির খেলা রাহুলের সঙ্গে মারমুখী ডি কক। তাদের রসায়নটাও চমৎকার। গেলবার দুজনে বেশ কিছু ইনিংসের গোড়াপত্তন করে দিয়েছেন। যদিও গত আসরের এলিমিনেটরে ডি কক ৬ রান করে আউট হয়েছেন।

মিডল অর্ডারে দলটির হাল ধরার দায়িত্ব পরবে নিকোলাস পুরান ও মান্নান ভোহরাদের কাঁধে। শেষ দিকে ঝড়ো ফিনিশিং দিতে দেখা যেতে পারে মার্কাস স্টয়নিস-ক্রুনাল পান্ডিয়াদের।

দুর্বলতা

পেস অ্যাটাকে কিছুটা দুর্বলতা হতে পারে সুপার জায়ান্টদের জন্য। যদিও লখনৌ শিবিরে আছে নাভিন উল হক এবং মার্ক উডদের মতো পেসার। দুজনের যে কোনো একজন দলে জায়গা পেতে পারেন। অভিজ্ঞতার বিচারে উড হয়ত প্রাধান্য পাবেন। তবে সবশেষ বাংলাদেশ সিরিজটা ভালো যায়নি এই পেসারের। ওয়ানডে সিরিজে কিছুটা পারফর্ম করেছেন। তবে শর্টার ফরম্যাটে ইংলিশ পেসারের থেকে ভালোই রান নিয়েছেন টাইগার ব্যাটাররা।

নাভিন উল হকের পক্ষেও নেই চলতি বছরের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। ২০২৩ সালে জাতীয় দলের হয়ে ৫ ম্যাচ পেয়েছেন ৩ উইকেট। ইকোনোমি রেটটাও ১০ ছুঁই-ছুঁই। ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টিতে ১৪ ম্যাচে ১৫ উইকেট পেলেও ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৯ এর উপরে।

এ ছাড়াও লোকেশ রাহুলের চিন্তার কারণ হতে পারে স্পিন অ্যাটাক। দলটির স্পিনশক্তিতে প্রধান অস্ত্র রবি বিস্নই। তার সঙ্গে আছেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। এই দুজনের আট ওভার থেকে গতবার এলিমিনেটরে ব্যাঙ্গালুরু আদায় করেছিল ৮৪ রান। বিনিময়ে উইকেট গেছে দুটি।

সেক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ বাহাতি স্পিনারের অভাববোধ করতে পারে উত্তর প্রদেশের দলটি। যদিও দলে অমিত মিশ্রের মতো অভিজ্ঞ বোলার আছেন, তবে তিনি দলে সুযোগ পাবেন কী না তা নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই। ফর্ম এবং বয়সটা যে তার পক্ষে যাচ্ছে না।

লখনৌ সুপার জায়ান্ট দল

ব্যাটার: লোকেশ রাহুল, আয়ুশ বাদোনি, কুইন্টন ডি কক (উইকেটরক্ষক), কৃষ্ণাপ্পা গৌতম, নিকোলাস পুরান (উইকেটরক্ষক), মানান ভোহরা।

অলরাউন্ডার: দিপক হুদা, প্রিরাক মানকাদ, কাইল মেয়ার্স, ক্রুনাল পান্ডিয়া, ড্যানিয়েল সামস, করন শর্মা, রোমারিও শেফার্ড, মার্কাস স্টয়নিস, জস ঠাকুর।

বোলার: আভিশ খান, রবি বিষ্নই, অমিত মিশ্র, মহসিন খান, নাভিন উল হক, স্বপ্নিল সিং, জয়দেব উনাদকাট, মার্ক উড, মায়াঙ্ক যাদব, যুধবির সিং।