হজের খরচ বাড়ানোর ‘ভয়’ দেখিয়ে কোটা পূরণের চেষ্টা

হজ প্যাকেজে উচ্চমূল্যের কারণে এবার দফায় দফায় নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েও হজযাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। এখনও ৮ হাজার ৫১৩টি আসন খালি। ইতোমধ্যে ৮ দফা বাড়ানো হয়েছে নিবন্ধনের সময়, তবুও কোটা পূরণ হচ্ছে না।

হজ

এ অবস্থায় আগামীতে প্যাকেজ মূল্য আরও বাড়তে পারে, তাই এবারই হজ পালন করতে দ্রুত নিবন্ধনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

গত রোববার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও সৌদি আরবের হারাম শরিফের কাছাকাছি কিছু হোটেল ভেঙে ফেলায় বেশি দামে হোটেল ভাড়া নিতে হচ্ছে। আগামী বছরগুলোতে হজের প্যাকেজ মূল্য আরও বাড়বে। তাই হজযাত্রীদের এ বছরই হজ প্যাকেজে নিবন্ধিত হওয়ার অনুরোধ করা হলো।

মন্ত্রণালয়ের এমন পদক্ষেপে এজেন্সিগুলো বলছে, আট দফা সময় বাড়িয়েও কোটা পূরণ না হওয়ায় এখন হজের খরচ আরও বাড়ানোর ‘ভয়’ দেখিয়ে কোটা পূরণের চেষ্টা করছে মন্ত্রণালয়।

২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালনের সুযোগ পাবেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয়। কোটা পূরণ না হওয়ায় বারবার নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হচ্ছে। সবশেষ অষ্টমবারের মতো হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ১১ এপ্রিল করা হয়েছে।

এ বছর প্রথমে সরকারিভাবে হজ পালনে খরচ ধরা হয়েছিল ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা এবং বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয়েছিল ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। আগের বছরের চেয়ে এবার উভয় প্যাকেজে খরচ বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা করে।

হঠাৎ করে এভাবে দেড় লক্ষাধিক টাকা খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রাক-নিবন্ধনকৃতদের অনেকেই হজ পালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

এ অবস্থায় হজের প্যাকেজমূল্য কমানোর দাবি উঠেছিল। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে সংসদীয় কমিটি থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত পর্যন্ত। পরে হজের উভয় প্যাকেজে মাত্র ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের। তবুও কোটা পূরণ হচ্ছে না।

এদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারতে হজের খরচ ৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের প্যাকেজ মূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা বেশি। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে প্যাকেজ মূল্য সাড়ে ৪ লাখ টাকার কম।

এ প্রসঙ্গে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘আমরা কোটা পূরণের চেষ্টা করছি। হজ প্যাকেজের বিমান ভাড়া নিয়েই বেশি কথা হচ্ছে। আগামী বছর হজ প্যাকেজ নির্ধারণের আগে বিমান ভাড়ার বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে কথা বলব।’

এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘হজ প্যাকেজ নিয়ে সবার মনে অসন্তোষ রয়েছে। এবার প্যাকেচ মূল্য বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হলো বিমান ভাড়া। ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে আমাদের বিমান ভাড়া বেশি। বিমান ভাড়া কমাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি।

এজেন্সি মালিকরা বলছেন, ‘বাংলাদেশ বিমান প্রতিবছরই হাজিদের বিমান ভাড়া বাড়ায়। খালি ফ্লাইটের হ্যান্ডলিং খরচ কমে যায়। যখন একটি ফ্লাইট কোনো যাত্রী বা লাগেজ ছাড়া খালি আসে, তখন এর তেল খরচ কমে যায়। কোনো করও দিতে হয় না। তাহলে ভাড়া কেন দ্বিগুণ হয়ে যায়?