জাতীয় দলের ‘বন্ধ’ দরজায় নাঈমের টোকা

২০১৯ সালে দুই ম্যাচ টেস্ট এবং তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ভারত সফর করে বাংলাদেশ। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় মোহাম্মদ নাঈম শেখের। জাতীয় দলের হয়ে প্রথম ম্যাচে খুব একটা আলো ছড়াতে পারেননি এই বাহাতি ওপেনার। আউট হয়েছেন ২৮ বলে ২৬ রান করে। তবে নিজের প্রতিভার জানান দিতে দেরি করেনি তিনি।

মোহাম্মদ নাঈম শেখ

সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ভারত ছুড়ে দেয় ১৭৫ রানের লক্ষ্য। জবাবে একাই বুক চিতিয়ে লড়াই করেন নাঈম। দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন সেদিন। ৪৮ বলে ৮১ রানের ঝড়ো ইনিংসে প্রায় জিতিয়েই দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। শেষ পর্যন্ত যোগ্য সঙ্গীর অভাবে পরাজয় মেনে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাকে।

এরপর দলের হয়ে আরও বেশ কিছু ভালো ইনিংস খেলেছেন নাঈম। যদিও স্ট্রাইকরেট নিয়ে কথা শুনতে হয়েছিল তাকে। সেটাতে উন্নতি করতে গিয়ে যেন ব্যাটিংটাই ভুলে গেলেন। বাজে ফর্মের সঙ্গে লড়তে-লড়তে দল থেকে বাদ পড়লেন।

শর্টার ফরম্যাটের আশাজাগানিয়া এই ওপেনার জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ ম্যাচটি খেলেছেন গত বছর এশিয়া কাপে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত ওই টুর্নামেন্টে আফগানস্তিানের বিপক্ষে খেলেন তিনি। ম্যাচে ৮ বলে ৬ রান করে বোল্ড আউট হন মুজিব উর রহমানের বলে। এরপর আর দলে জায়গা পাননি।

নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা নাঈমের জন্য প্ল্যাটফর্ম ছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। সেখানেও বড্ড অসহায় ছিল তার ব্যাটিং। অবশেষে নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন ২৪ বছর ছুঁই-ছুঁই এই ব্যাটার। চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) নিয়মিত রান করছেন।

এখন পর্যন্ত ডিপিএলে ম্যাচ খেলেছেন ১০টি। ১০২.৭১ গড়ে ৭১৯ রান করেছেন। এর মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ রানের ইনিংস আটটি। যে দুটি ইনিংসে তিনি ফিফটি ছাড়াতে পারেননি সেটাও চল্লিশের কোটায়। এর মধ্যে একটিতে ছিলেন ৪৩ রানে অপরাজিত। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি মোহামেডানের বিপক্ষে হাঁকিয়েছেন দারুণ এক শতক। ১১০ রানের অপরাজিত ইনিংসে প্রায় একাই হারান মোহামেডানকে।

নারায়ণগঞ্জের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার অগ্রনী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে খেলে আবাহনী। ম্যাচে আগে ব্যাট করে সবকটি উইকেট হারিয়ে আবাহনী তুলেছে ২৬৭ রান। আনামুল হকের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমে নাঈম এদিন আউট হয়েছেন ৭৫ বলে ৭৯ রান করে। ইনিংসে দশটি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কা হাঁকিয়েছেন দুটি।

নাঈম শেখের এমন ধারাবাহিক হয়ে ওঠায় জাতীয় দলের ‘বন্ধ’ হয়ে যাওয়া দরজাটা কী আবার খুলবে?