আপনি পড়ছেন

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর স্বাধীনতা ও আইনি মর্যাদা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তোপের মুখে পড়েছেন প্যারিসে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লু শায়ে। তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করতে ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথেরিন কোলোনাকে অনুরোধ করে চিঠি পাঠিয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৮০ জন সদস্য। লু শায়ের বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাইতে ইউরোপের কয়েকটি দেশ চীনা রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছে।

lu shaye
প্যারিসে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লু শায়ের বিতর্কিত মন্তব্যে ইউরোপীয় দেশগুলো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে

শুক্রবার রাতে ফ্রান্সের এলসিআই টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে লু শায়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত প্রজাতন্ত্রগুলোর কোনো আইনি ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেন। ক্রিমিয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

২০১৪ সালে জোরপূর্বক রাশিয়ার দখলে নেওয়া ক্রিমিয়া ইউক্রেনের অংশ কিনা, প্রশ্ন করলে লু শায়ে বলেন, এমনকি এইসব সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোরও আন্তর্জাতিক আইনে কোনো ভিত্তি নেই। কেননা সার্বভৌম দেশ হিসেবে তাদের মর্যাদা বলবত করতে কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি হয়নি। আর ক্রিমিয়ার প্রশ্নটি দৃষ্টিভঙ্গী ও অবস্থানের ওপর নির্ভর করে। শুরুতে ক্রিমিয়া রাশিয়ার অংশ ছিল। সোভিয়েত আমলে নিকিতা ক্রুশ্চেভ ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব দেন।

চীনা রাষ্ট্রদূতের এই মন্তব্য পূর্ব ইউরোপ ও বাল্টিক অঞ্চলের এক ডজনের বেশি দেশের অস্তিত্বকে খারিজ করে দেওয়ার শামিল। এমনকি তার কথা সত্য বলে ধরে নিলে রাশিয়ারও আইনি ভিত্তি থাকে না। কেননা ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর এসব দেশ স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে পরস্পরকে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং জাতিসংঘের সদস্যপদ গ্রহণ করেছিল।

রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে চীন যখন নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে ঠিক সে সময় ইউক্রেনের মতো সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোর স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত এভাবে প্রশ্ন তোলায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয়েছে ইউরোপের দেশগুলো।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল বলেছেন, চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। ইইউ কেবল এটাই ধরে নিতে পারে যে এসব বক্তব্য চীনের আনুষ্ঠানিক নীতির প্রকাশ নয়।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে যেসব দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ফ্রান্স তাদের প্রতি পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছে। এসব মন্তব্য চীনের অবস্থান প্রকাশ করছে কিনা সে বিষয়ে আমরা বেইজিংয়ের ব্যাখ্যা চাইছি।

লাটভিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লু শায়ের বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে আজ রিগায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এডগার্স রিংকেভিকস লু শায়ের বক্তব্য সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সোমবার রাতে অনুষ্ঠেয় ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্ক পর্যালোচনা করা হবে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিহাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, নিজেদের হাজার বছরের ইতিহাস নিয়ে খুব খুঁতখুঁতে একটা দেশের কাছ থেকে ক্রিমিয়ার ইতিহাসের আজগুবি বয়ান শোনা এক অদ্ভূত অভিজ্ঞতা। আপনারা যদি বড় রাজনৈতিক শক্তি হতে চান, তাহলে বহিরাগত রুশদের বক্তব্য তোতাপাখীর মতো আওড়ানো বন্ধ করুন।

লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ সকালে সে দেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েলাস ল্যান্ডবার্গিস টুইটারে লিখেছেন- বাল্টিক দেশগুলো কেন ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে চীনকে বিশ্বাস করে না, এই ভেবে যারা অবাক হন, তাদের জন্য রইল চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য, যেখানে ক্রিমিয়া হচ্ছে রাশিয়ান আর আমাদের দেশগুলোর সীমান্তের কোনো আইনি ভিত্তি নেই।

এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্যারিসে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাইতে তালিনে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। এস্তোনিয়া উল্লেখ করেছে, ১৯৯৪ সাল থেকে চীন বুদাপেস্ট চুক্তিকে স্বীকার করছে। ওই চুক্তিতে রাশিয়া ইউক্রেনের সীমান্ত মেনে নিয়েছিল এবং ইউক্রেন তাদের হাতে থাকা সোভিয়েত আমলের পারমাণবিক অস্ত্র রাশিয়ার কাছে হস্তান্তর করতে সম্মত হয়েছিল।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.