মার্কিন রাষ্ট্রদূত: ইয়েমেনে যুদ্ধ বন্ধে ইরান-সৌদি সমঝোতা যথেষ্ট নয়

ইয়েমেনে দীর্ঘদিন ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সাম্প্রতিক সমঝোতা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন ইয়েমেন বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত টিম ল্যান্ডারকিং। ১১ মে, বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় ল্যান্ডারকিং এই মন্তব্য করেছেন। খবর দ্য নিউ আরব।

বক্তব্য দিচ্ছেন মার্কিন বিশেষ দূত টিম ল্যান্ডারকিং

মার্কিন এই দূত বলেছেন, ‘আঞ্চলিক উত্তেজনা কমিয়ে দেয় এমন কিছু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব সময় সমর্থন করে থাকে। কেবল সৌদি-ইরান চুক্তি ইয়েমেনে শান্তি আনবে না। সৌদি আরব এবং ইরান ছাড়াও এই সংঘাতের জন্য আরও অন্য কিছু দায়ী। অভ্যন্তরীণ উত্তেজনা এবং বিভাজন এই যুদ্ধের আরেকটি কারণ।’

২০২২ সালের এপ্রিলে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনী এবং হুথিরা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। পরবর্তীতে মার্কিন সমর্থনে এই চুক্তি দুবার নবায়ন করা হয়। এরপরে সৌদি এবং হুথি কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। গত মাসে হুথি ও সৌদিদের হাতে আটক শতাধিক বন্দিদের বিনিময়ও হয়েছে।

ল্যান্ডারকিং সতর্কতার সঙ্গে আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ইয়েমেনে স্থায়ী শান্তি আনতে একটি চুক্তি করতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আশাবাদী সমস্ত পক্ষ একটি গুরুতর আলোচনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি বন্দিদের মুক্তির মাধ্যমে উভয় পক্ষ শান্তির পথে আরেকটু অগ্রসর হয়েছে। তবে আমি মনে করি না, আমরা এখনও ফিনিশ লাইনের কাছাকাছি আছি। সামনে বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমি মনে করি, এখনও দলগুলোর মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ অবিশ্বাস এবং বিভাজন রয়েছে। এই বিষয়গুলো সুরাহা করতে হবে।’

এদিকে ইরান প্রকাশ্যে সৌদি-হুথি চুক্তিকে সমর্থন করেছে। তবে ল্যান্ডারকিং জানিয়েছেন, ইরানিরা শান্তি প্রচেষ্টায় আগ্রহী এই বিষয়টি প্রমাণ করতে হবে তাদের। তিনি বলেছেন, ‘আমরা এটি বাস্তবে দেখতে চাই। আমরা অস্ত্র চোরাচালান এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশনগুলোর লঙ্ঘনের ধারাবাহিকতা দেখতে চাই না।’

প্রসঙ্গত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই ইরানের বিরুদ্ধে হুথিদের কাছে অস্ত্র চোরাচালানের অভিযোগ করেছে। এটি জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের শামিল বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে ইয়েমেনে যুদ্ধ চলছে। যার ফলশ্রুতিতে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত মার্চে ইরান ও সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের জন্য চীনের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। অনেকেই এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন, এটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে শান্তি আনতে পারে। প্রায় এক দশক ধরে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট সমর্থিত ইয়েমেনি সরকারী বাহিনী এবং ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের মধ্যে ইয়েমেনে যুদ্ধ চলছে।