চার বছর পরও বাজারে বিক্রি হচ্ছে বাতিল ওষুধ

সরকারিভাবে বাতিল হওয়া ওষুধ চার বছর পর এখনও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন কোম্পানি এসব ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ওষুধের কম্বিনেশন অপ্রয়োজনীয় বলেই বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

ফাইল ছবি

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল ৮২টি ব্র্যান্ডের ওষুধ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় ‘ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি’। এরপর একই বছরের ৭ মে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরিত আদেশ বিজ্ঞপ্তি আবারে প্রকাশ করা হয়।

সরকারিভাবে বাতিল হওয়া ওষুধগুলো মধ্যে আছে, ৩টি অ্যানেসথেটিক, ৪টি অ্যান্টিবায়োটিক, ৫টি অ্যান্টিসাইকোটিক, ৬১টি ভিটামিন এবং ৯টি ইলেকট্রোলাইট।

একটি সংবাদ মাধ্যমের খবরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ওষুধ প্রযুক্তিবিদ বলেন, ওষুধ বাতিলের জারি করা নোটিয়ে কিছু ফাঁকফোকর রয়েছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ওষুধ বাতিল করেছে কিন্তু নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেনি কবে থেকে সেটার  উৎপাদন ও বাজারজাত করা যাবে না।

কাঁচামাল থেকে যাওয়ার অজুহাতে কোম্পানিগুলোকে এ সুযোগটা দেওয়া হয়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চার বছর পরও বাতিল হওয়া ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে।

যদিও কিছু দিন আগে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘বাতিল হওয়া ওষুধ উৎপাদনের কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ করে থাকে তবে তারা অপরাধ করছে।’ এই বক্তব্য দেওয়ার কয়েকদিন পর মো. আইয়ুব হোসেন অবসরে যান।

বাতিল হওয়া যেসব ওষুধ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো হলো- অ্যান্টিবায়োটিকে মধ্যে বেক্সিমকো কোম্পানির ভ্যাসকুরিন সাপোজিটরি ও আল্ট্রাফেন প্লাস, এরিস্টো কোম্পানির এর্ডন সুপার, স্কয়ার কোম্পানির মাইক্লোফেনাক ও মাইক্লোফেনাক-৭৫/ ২০০, হেলথকেয়ার কোম্পানির আর্থ্রোফেন, এভারেস্ট কোম্পানির ডিভিসি-৫০/২০০, জেনারেল কোম্পানির মিসক্লো-৫০/২০০ ও মিসক্লো-৭৫/২০০, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির নোপেইন এ-৫০ ও নোপেইন এ-৭৫, একমি কোম্পানির মিসোফেনাক-৫০/ ২০০, পপুলার কোম্পানির প্রোফেনাক প্লাস-৫০/২০০, কেমিকো কোম্পানির অ্যাপেইন এমএস, সোমাটেক কোম্পানির মিসোফেন ৭৫/২০০, প্যাসিফিক কোম্পানির প্যানফ্রি প্রাস-৫০/২০০।

অ্যানেসথেটিকের মধ্যে আছে- কেমিস্ট ল্যাবরেটরিজ কোম্পানির বুপিকেইভ হেভি, পপুলার কোম্পানির বুপি হেভি, হেলথকেয়ার কোম্পানির ভেস্পাইভ ইনজেকশন, ইনসেপ্‌টা কোম্পানির স্পাইনো।

অ্যান্টিসাইকোটিকের মধ্যে আছে- অ্যালকো কোম্পানির এনফ্লু, অ্যামিকো কোম্পানির অ্যামিভাল ও অ্যামিভাল এফ, বায়োফার্মার ইউফোর, জেনারেল কোম্পানির ফ্লুট্রিপ, বেক্সিমকো কোম্পানির অ্যাপ্রেসিন, নিপা কোম্পানির ফ্রেশ, ইবনে সিনা কোম্পানির মুডঅন, এরিস্টোফার্মার নরজিন, অপসোনিন কোম্পানির পারমিভাল, একমি কোম্পানির নরফ্লু, সোমাটেক কোম্পানির ট্রিপনর এবং এসকায়েফ কোম্পানির টেলাবিড ১, টেলাবিড ২, টেলাবিড ফোর্টি।

ভিটামিনের মধ্যে আছে- সুপ্রিম কোম্পানির সুপ্রাফল টিআর, জেনারেল কোম্পানির আইরোফল, মেডিনেট কোম্পানির ফেরিগান, অ্যালবিয়ন কোম্পানির ডায়ালেক্ট-এম, জেসন কোম্পানির ফেমিক্যাপ, এইক্সিম কোম্পানির ফেরোফি জেডটিআর, হাডসন কোম্পানির ফেরোসন টিআর, অ্যামিকো কোম্পানির ফেরো টিআর, কুমদিনি কোম্পানির ফেরন টিআর, ফার্মাশিয়া কোম্পানির আইটপ, ইবনে সিনা কোম্পানির সিনাফেরন, অ্যালবিয়ন কোম্পানির অ্যালফল টিআর, এপিসি কোম্পানির এপিফল টিআর, বেনহাম কোম্পানির হেমোফল-টিআর, বায়ো কোম্পানির বিরন প্লাস, সিনথো কোম্পানির অ্যাস্ট্রো জেড, অ্যাপোলো কোম্পানির জিমোবিন, ডিসেন্ট কোম্পানির জিলিক টিআর, কসমিক কেমিক্যাল কোম্পানির জিরন এফ, স্কয়ার কোম্পানির জিফ, দেশ কোম্পানির ট্রাইফল, ইউনিমেড অ্যান্ড ইউনিহেলথ কোম্পানির জিফা টিআর, এফএনএফ কোম্পানির নুফিজ, হাডসন কোম্পানির আইরন, সিলভা কোম্পানির প্রেনাটল, হোয়াইট হর্স কোম্পানির ফিজ-টিআর, ওরিয়ন কোম্পানির ফেরোলিন টিআর, মাইস্টিক কোম্পানির ফলিরন টিআর, মেডিকন কোম্পানির ফিওলেট টিআর প্লাস, সেন্ট্রাল কোম্পানির ফেরোফল জেড, হলমার্ক কোম্পানির ফেলবি টিআর, নিপা কোম্পানির ফেফা টিআর, মডার্ন কোম্পানির এফই-জেড, একমি কোম্পানির এ ক্যাল ডিএ, হোয়াইট হর্স কোম্পানির কোরালভিট-ডি, এশিয়াটিক কোম্পানির টিআর, ইউনিমেড অ্যান্ড ইউনিহেলথ কোম্পানির অসক্যাল ডি ও ওকিক্যাল-ডি, নিপ্রো জেএমআই কোম্পানির স্টারক্যাল ডি ফোর্টি, নোভেল্টা বেস্টওয়ে কোম্পানির নোভাক্যাল-ডিএক্স, স্কয়ার কোম্পানির ক্যালবো ফোরটি এবং ইবনে সিনা কোম্পানির আইপিক্যাল-সি।

ইলেকট্রোলাইটের মধ্যে আছে অপসো স্যালাইনের ডেকট্রোজ ৪.৩ %+সোডিয়াম ক্লোরাইড ০.১৮% আইভি ইউনফিউশন, যেটি আইডিএস নামে পরিচিত।