সামরিক বাহিনী ছেড়ে পালাচ্ছে মিয়ানমারের সেনারা

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ছেড়ে পালাচ্ছে সেনারা। দুই বছর আগে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া সামরিক জান্তা সরকারের পক্ষ ত্যাগ করছে সেনাবাহিনীর অনেক সদস্য। সেনাবাহিনী ত্যাগকারী সৈন্যরা বলছেন, তারা গণতন্ত্রপন্থী তথা নিজেদের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চান না। সামরিক জান্তা বর্তমানে গণতন্ত্রপন্থীদের প্রতি চরম নিষ্ঠুরতা দেখালেও তাদের আন্দোলন দমনে হিমশিম খাচ্ছে। খবর বিবিসি।

থাইল্যান্ডে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের কয়েকজন সেনাসদস্য

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের গণতন্ত্রীপন্থী নেত্রী অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। তারপর থেকেই দেশটিতে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে।

সেনাবাহিনীর হত্যা-নির্যাতন ও গুম-গ্রেপ্তারের মুখে গণতন্ত্রপন্থীরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চোরাগোপ্তা পথে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দমনে বিমান হামলা পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী।

তবে অনেক সেনা নিজেদের দেশের লোকজনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এ কারণে সেনাবাহিনী ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছে অনেক সেনাসদস্য। বিশেষ করে সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে চলে যাচ্ছে তারা।

সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনী ছেড়ে থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়ে শতাধিক সেনাসদস্য। এদেরই একজন নে অং।

পক্ষত্যাগকারী সেনা নে অং বলেন, দেশের কেউ আর সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে চায় না। জান্তার নিষ্ঠুরতা ও অন্যায় কর্মকাণ্ডকে লোকেরা ঘৃণা করে।

অং বলেন, প্রথমবার যখন আমি ঘাঁটি থেকে পালানোর চেষ্টা করি, আমাকে ধরে অন্যরা রাইফেলের বাট দিয়ে মারাত্মকভাবে পেটায়। আমাকে বলা হয় বিশ্বাসঘাতক।

দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন অং। সেনাবিরোধী গ্রুপগুলোর সহযোগিতায় সীমান্ত পার হয়ে চলে যান থাইল্যান্ডে। পালিয়ে আসা ১০০ সেনার সঙ্গে গোপন একটি বাড়িতে থাকেন তিনি।

মিয়ানমারের নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৩ হাজার সেনা-পুলিশ বাহিনী ছেড়ে পালিয়ে গেছে।