গাইবান্ধার সাঁওতাল গ্রাম পরিদর্শন করলেন মুখ্য বিচারিক হাকিম

বহুল আলোচিত গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করতে ঘটনাস্থলে গেছেন মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. শহিদুল্লাহ। মঙ্গলবার বেলা ১১টার পর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এলাকার সাঁওতাল জনবসতিপূর্ণ মাদারপুর গ্রাম পরিদর্শন করেন তিনি। একই দিন সকালে ঘটনাস্থলে যান পুলিশের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বগুড়া অঞ্চলের অতিরিক্ত সুপার আক্তার হোসেন।

পরিদর্শনের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ইক্ষু খামার ভূমি উদ্ধার সংহতি কমিটির নেতা ফিলিমিন বাস্কে। তিনি বলেন, 'গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিম ও পিবিআইয়ের অতিরিক্ত সুপার মাদারপুর গ্রামে এসে সাঁওতালদের দু:খ-দুর্দশার কথা শোনেন। সাওতালদের সঙ্গে তিনি দীর্ঘসময় কথা বলেন, ঘটনার বিবরণ শোনেন। যেই স্থানে সংঘর্ষ হয় মুখ্য বিচারিক হাকিম সেই জায়গাটিও পরিদর্শন করেন।

এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর উচ্চ আদালত গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিমকে গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় প্রকৃত অপরাধী কারা, পুলিশের ভুমিকা আছে কি না এ বিষয়ে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন। তদন্তের পর ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই আদেশে আদিষ্ট হয়েই মুখ্য বিচারিক হাকিম আজ সেখানে গেছেন।

জানা গেছে, সাঁওতালদের বহুল আলোচিত হামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায় ১৬ নভেম্বর স্বপন মুর্মুর একটি অভিযোগ (মামলা) করেন। পরে ২৬ নভেম্বর থমাস হেমব্রেম আরেকটি অভিযোগ করেন। পরে পিবিআইয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা দিয়ে তদন্ত করতে রংপুর রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজিকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন আদালত। মামলায় পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ জানুয়ারি।

প্রসঙ্গত, ৬ নভেম্বর গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটার ঘটনাকে ইস্যু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সেখানে থাকা সাঁওতালদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ওই হামলায় অনেকেই আহত হন। অভিযোগ আছে, সাঁওতালদের ওপর হামলা, তাদের ঘরবাড়িতে আগুন ও লুটপাট চালানো হয়। ঘটনায় সাঁওতালরা থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন। একটি অভিযোগ সাধারণ ডায়েরি অন্যটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। পরে পুলিশ নিজে বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করে। এ ব্যাপারে হাইকোর্টে পৃথক রিট ও করা হয়েছে।