বাড়ছে তিস্তা-যমুনার পানি, ৮ পয়েন্টে ভাঙন, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ও যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা বাঁধের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে উপকূলে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে তিস্তা-যমুনার পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

এদিকে ২-৩ দিনের মধ্যে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নদী উপকূলীয় এলাকায় বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

১৮ জুন, রোববার বিকেলে তিস্তা ব্যারাজে পানিপ্রবাহ ছিল ৫১ দশমিক ৮৭ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ডালিয়া পয়েন্টের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ্দৌলা বলেন, উজান থেকে আসা পানি যেভাবে ঢুকছে তাতে যে কোনো মুহূর্তে তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তিস্তা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তাপাড়ের কৃষক নবীর আলী বলেন, গতকাল শনিবার বিকেল পর্যন্ত তিস্তায় পানি কম ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে পানি বাড়তে শুরু করেছে।

টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে ফসলের ক্ষতি হয়েছে।  নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ।

তিস্তাপাড়ের ৮ পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে

হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, আমাদের কিছু এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে বলে শুনেছি। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম সারোয়ার বলেন, তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকছে। ইউপি চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে সেসব এলাকাগুলোতে খোঁজখবর নিতে।

পানি বাড়তে থাকায় তিস্তাপাড়ের ৮ পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দহগ্রাম, সিন্দুর্না, ডাউয়াবাড়ী, গড্ডিমারী, ভোটমারী, কুটিরপাড়, খুনিয়াগাছ ও তাজপুর গ্রামে তিস্তার পাড় ভাঙতে শুরু করেছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, 'তিস্তাপাড়ের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনপ্রবণ এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

এদিকে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হক বলেন, পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। যমুনা নদীর পানির উচ্চতা দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৮৫ মিটার। বিপৎসীমা থেকে ২ দশমিক ৪ মিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যমুনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।