বিশ্বকাপ বাছাই: প্রথম দিনে উইন্ডিজ-জিম্বাবুয়ের জয়

টানা দ্বিতীয়বারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা পেতে বাছাইপর্ব খেলতে হচ্ছে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন উইন্ডিজকে। ২০২৩ বিশ্বকাপের টিকিট পেতে প্রথম ম্যাচে জয় দিয়েই শুরু করেছে উইন্ডিজ। অন্যদিকে নিজেদের ঘরের মাঠে আট উইকেটের বড় জয় দিয়ে বাছাইপর্ব শুরু করেছে জিম্বাবুয়ে।

ক্রেইগ আরভীন ও শন উইলিয়ামসের জোড়া শতকে সহজ জয় তুলে নেয় জিম্বাবুয়ে

বাছাইপর্বের উদ্বোধনী ম্যাচে আগে ব্যাট করে আট উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান করে নেপাল। প্রথম কোনো টেস্টখেলুড়ে দেশের বিপক্ষে খেলতে নেমে ভালোই করে এশিয়ার দেশটি। তবে দুর্দান্ত খেলা জিম্বাবুয়ের সামনে তা যথেষ্ট ছিল না। ক্রেইগ আরভীনের অনবদ্য শতকে ৩৫ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে। প্রত্যাশিতভাবেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন তিনি।

জিম্বাবুয়েকে এদিন ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল নেপাল। দলটি ৩১.৪ ওভারে ১৭১ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে। ১০ উইকেট হাতে নিয়ে সেখান থেকে রানটাকে কতদূরে নেবে নেপাল সেটাই ছিল তখন চিন্তার বিষয়। জোড়া উইকেট হারিয়ে ছন্দপতন হয় নেপালের। ওয়ানডে ইতিহাসের ৯৯তম ব্যাটার হিসেবে ৯৯ রানে আউট হন নেপালের কুশাল ভুরতেল। ৯৫ বলে দুই ছক্কা আর ১৩ চারে সাজান ইনিংসটি। আরেক ওপেনার আউট হন ৬৬ রানে।

এরপর কুশল মাল্লা ৪২ বলে ৪১ এবং অধিনায়ক রোহিত পাউডেল ২৯ বলে ৩১ রান করে প্রত্যাশার দাবি মেটাতে পারেননি। দুজনেই আউট হয়েছেন অসময়ে। এরপরতো বৃষ্টির মতো উইকেট হারায় দলটি। নয়ত রানটা ৩২০-৩৩০ ছাড়ালে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন রিচার্ড এনগারাভা।

রান তাড়ায় দলীয় ৪৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৮২ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে রাখেন আরভীন ও ওয়েসলি মাদেভেরে। ৩২ রান করে আউট হন মাদেভেরে। জিম্বাবুয়ে তাদের সেরা খেলাটা খেলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে। এ সময় আরভীনের সঙ্গে ‍জুটি বাঁধেন শন উইলিয়ামস।

শুরু থেকেই মারমুখী ব্যাটিং করেন উইলিয়ামস। ৭০ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি। যা কিনা জিম্বাবুয়ের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুততম শতকের রেকর্ড। ইনিংসে ১৩ বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কা মেরেছেন একটি। আরভীনও ততক্ষণে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি করে অপরাজিত ছিলেন। ১২৮ বলে শেষ পর্যন্ত ১২১ রান করে অপরাজিত থেকে জিম্বাবুয়ের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তিনি।

নেপালের হয়ে এই ম্যাচে উইকেটশূন্য থাকেন অভিজ্ঞ স্পিনার সন্দীপ লামিচানে। ৩৩ ইনিংস পর কোনো ম্যাচে উইকেট পেলেন না লামিচানে। টানা ইনিংসে উইকেট নেওয়ার যাত্রা থামে তার। এর আগে টানা ২৬ ইনিংসে উইকেট নেওয়ার রেকরর্ডটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার ব্রেট লির।

উইন্ডিজের বিপক্ষে বৃথাই গেছে যুক্তরাষ্ট্রের গাজানন্দ সিংয়ের সেঞ্চুরিটি

দিনের অন্য ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৯৭ রান তোলে উইন্ডিজ। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রান করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ৩৯ রানের জয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন জেসন হোল্ডার।

শুরুতেই চাপে পড়ে উইন্ডিজ। দলীয় ১৪ রানের মাথায় আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার। ১১৫ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন জনসন চার্লস ও শাই হোপ। চার্লস ৬৬ ও হোপ ৫৪ রান করে আউট হন।

এরপর রোস্টন চেজ (৫৫) এবং হোল্ডারের (৫৬) জোড়া ফিফটিতে বড় সংগ্রহ তিনশ ছুঁই-ছুঁই স্কোর পায় উইন্ডিজ। মাঝে ২৮ বলে ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন নিকোলাস পুরান।

রান তাড়ায় ৫৫ রানের মাথায় ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর অ্যারন জোন্সকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন গাজানন্দ সিং। দলকে ৯৭ রানে রেখে আউট হয়ে যান জোন্স। একাই প্রতিরোধ অব্যাহত রাখেন গাজানন্দ। তাকে সঙ্গ দেন ৯-এ নামা সায়ান জাহাঙ্গীর। দুজনের জুটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখে যুক্তরাষ্ট্র। তবে দলকে ১৫৫ রানে রেখে জাহাঙ্গীর ফিরে গেলে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় যুক্তরাষ্ট্র। 

আস্কিং রান রেট বেড়ে যাওয়ায় ম্যাচ হেলে যায় উইন্ডিজের দিকে। শতক হাঁকিয়ে গাজানন্দ কেবল পরাজয়ের ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছেন। ১০৯ বলে ১০১ রান করে অপরাজিত ছিলেন ৩৫ বছর বয়সী এই ব্যাটার। ইনিংসে দুটি ছক্কার সঙ্গে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন আটটি।