‘নাৎসি জার্মানির মতো যুদ্ধাপরাধ করছে ইসরায়েল’

অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী যা করছে তাকে যুদ্ধাপরাধ বলা যেতে পারে। এটিকে নাৎসি জার্মানির সঙ্গে তুলনা করা যায়। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর একজন সাবেক শীর্ষ জেনারেল ১৩ আগস্ট, রোববার এক সাক্ষাতকারে এই কথা বলেছেন। খবর দ্য নিউ আরব।

আমিরাম লেভিন

ইসরায়েলের কান রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নর্দান কমান্ডের সাবেক প্রধান আমিরাম লেভিন বলেছেন, ‘অধিকৃত পশ্চিম তীরে ৫৭ বছর ধরে কোনো গণতন্ত্র নেই, এটি সম্পূর্ণ বর্ণবাদ। ইসরায়েলি বাহিনী সেখানে সার্বভৌমত্ব প্রয়োগ করতে বাধ্য হচ্ছে। এই বাহিনী ভেতর থেকে পচে যাচ্ছে। এটি সেটেলার দাঙ্গাকারীদের ওপর নির্ভর করে আছে এবং যুদ্ধাপরাধের অংশীদার হতে শুরু করেছে।’

লেভিন অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনীর কর্মকাণ্ডকে নাৎসি জার্মানির সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা আমাদের পক্ষে বলা কঠিন, তবে এটি সত্য। হেবরনের চারপাশে হাঁটুন, রাস্তার দিকে তাকান। সে রাস্তায় আরবদের আর যেতে দেওয়া হয় না, সেখানে কেবলমাত্র ইহুদিদের অধিকার রয়েছে। সেই অন্ধকার দেশে অর্থাৎ নাৎসি জার্মানিতে ঠিক এটাই ঘটেছিল।’

এই সাক্ষাতকার দেওয়ার আগের দিন লেভিন তেল আবিবে গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভে একটি জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়েছিলেন। তিনি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গভিরের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। চরমপন্থী এই দুই মন্ত্রী ইসরায়েলকে যুদ্ধাপরাধের দিকে টেনে আনার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আমিরাম লেভিন ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ডেপুটি প্রধানও ছিলেন। তিনি ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, তারা গণতন্ত্র জানে না।

এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক, মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোসহ জাতিসংঘের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা, ইসরায়েলকে অবৈধভাবে দখলকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত বর্ণবৈষম্য চালানোর জন্য অভিযুক্ত করে আসছে। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে অতি ডানপন্থী জোট সরকার ইসরায়েলের বর্ণবাদী নীতিগুলোকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। চরমপন্থী মন্ত্রীরা সহিংসতা ও বৈষম্যকে উস্কে দিচ্ছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের সহিংসতা এবং ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সহিংসতা উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে। ফিলিস্তিনি শহরগুলোতে বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণের শত শত ঘটনা ঘটেছে।

অধিকৃত পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রতিদিনই প্রাণঘাতী অভিযান পরিচালনা করছে। সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বাড়ছে।  ২০২২ সালের তুলনায় চলতি বছর এখন পর্যন্ত বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।