সর্বজনীন পেনশন কি শরীয়ত সম্মত? উত্তরে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

দেশে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি প্রকল্প চালু করেছে সরকার। চার শ্রেণির ব্যক্তিকে এ পেনশন কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। তারা হলেন- প্রবাসী বাংলাদেশি, বেসরকারি চাকরিজীবী, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মী এবং অসচ্ছল ব্যক্তি।

সর্বজনীন পেনশন নিয়ে কথা বলেছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা অনুযায়ী, এ কর্মসূচিতে যুক্ত গ্রাহক ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত সরকারের কাছে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নির্ধারিত হারে নিয়মিত জমা করবেন। এরপর গ্রাহক আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন। চাঁদা পরিশোধের পর গ্রাহক মারা গেলে তার নমিনি পেনশন পাবেন ১৫ বছর।

সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচিকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই সর্বজনীন পেনশন সুবিধা নিয়ে ইসলামী আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহও তার মতামত ব্যক্ত করেছেন।

সম্প্রতি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই সর্বজনীন পেনশন সুবিধা চালু আছে। আমাদের দেশেও চালু হলো। মৌলিকভাবে এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

তবে সরকার ঘোষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির যে বিধিমালা দেখা যাচ্ছে তাতে, গ্রাহক সরাসরি সরকারকে টাকা দেবে। এর বিপরীতে গ্রাহক পেনশন হিসেবে যে টাকা পাবেন তা হারাম আয়। কারণ, তাতে রিবা ও গারার দুটোই আছে। যে টাকা দেওয়া হবে সেই টাকা চেয়ে বেশি নেওয়া, এটা স্পষ্ট সুদ। তবে পেনশনার কখনও কমও পেতে পারে। তা কনভেনশনাল বীমার অবিকল, যা 'গারার' ও রিবা নির্ভর। অর্থাৎ, গ্রাহক নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত নির্ধারিত হারে নিয়মিত অর্থ জমা দেবেন, বিপরীতে সরকার তাকে পেনশন দেবে। যাকে বিশ্বের উলামায়ে কেরামরা হারাম হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সরকারি বন্ড, সঞ্চয় পত্র, পোস্ট সঞ্চয় এগুলো যেমন হারাম আয়, এটিও তাই।

শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে সেই টাকার বিনিময়ে অতিরিক্ত টাকা পাওয়ার যে চুক্তি তা সুদের আওতায় পড়ে। এদেশের বেশিরভাগ মুসলমান সুদকে অপছন্দ করে। এ কারণে ইসলামী ব্যাংকগুলোতে গ্রহকদের ভিড় বেশি। এমন অবস্থায় আমরা মনে করি, সাধারণ স্কিমের পাশাপাশি সুদমুক্ত একটি স্কিমও চালু করা উচিত। যাতে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তাতে অংশ নিতে পারে। সরকার আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নিলেই এটি সম্ভব।