ঢাকায় দুটি বড় সমাবেশ, শক্তি দেখাবে আওয়ামী লীগ

সেপ্টেম্বরের শুরুতে রাজধানী ঢাকায় বড় সমাবেশ করে দলের সাংগঠনিক শক্তির পরিচয় দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ২ সেপ্টেম্বর নগরীর আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে জনসভার আয়োজন করবে আওয়ামী লীগ। দুটি সমাবেশেই ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খবর প্রথম আলো।

আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা

সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধী দল ও ভোটারদের কাছে নিজেদের শক্তি দেখাতেই বড় ধরনের এ সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছে আওয়ামী লীগ।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য সারাদেশ থেকে যুবকদের জড়ো করতে গত একমাস ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে ছাত্রলীগ। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে আগারগাঁওয়ের সমাবেশে ঢাকা বিভাগের সব জেলা থেকে দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পর এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, সমাবেশে বিপুল জনসমাগম নিশ্চিত করতে দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যায়ে কঠোর বার্তা পাঠানো হয়েছে। ছাত্রলীগ তার সাংগঠনিক ইউনিট এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিটকে বড় সমাবেশ নিশ্চিত করতে বলেছে। এতে আরও বলা হয়, অল্প সংখ্যক লোক নিয়ে এলে নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে। এ বিষয়ে জারি করা চিঠিতে বড় জমায়েত নিশ্চিত করার জন্য পুরস্কার দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। জেলা পর্যায়ের নেতা এবং দলীয় এমপিদেরও টার্গেট দেওয়া হয়েছে। 

২২ আগস্ট নগরীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী সাংগঠনিক জেলার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে সমাবেশে বিপুল লোক আনার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, সামবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সাফল্য তুলে ধরবেন। পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করবেন যে সংবিধান অনুযায়ী আগামী সাধারণ নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং কেউ তা বানচাল করতে পারবে না।

সমোবেশের বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ছাড়াও সিলেট, বরিশাল, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে জনসভায় যোগ দেবেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল এবং তারাই দলের শক্তি। কেউ যদি মনে করে আ.লীগকে ক্ষমতা থেকে ঠেলে দেওয়া যাবে তা ভুল।

এতদিন বিএনপির কর্মসূচির বিপরীতে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে ছিল আওয়ামী লীগ। সেই অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছে দলটি।

আওয়ামী লীগের এসব সমাবেশের উদ্দেশ্য হবে দেশে ও দেশের বাইরে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা তুলে ধরা। আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিএনপি রাজপথের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের অবস্থানে কোনো ক্ষত সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে তা দেখানো। ক্ষমতাসীন দল নির্বাচন পর্যন্ত এ ধরনের বিশাল জনসভা চালিয়ে যাবে।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ২৮ জুলাই নয়া পল্টনে বিএনপির জনসভায় বিপুল উপস্থিতি ছিল। এরপর থেকেই বড়সড় সমাবেশ করার চাপ অনুভব করে আওয়ামী লীগ। ২ আগস্ট রংপুরে বড় সমাবেশের আয়োজন করে দলটি। ক্ষমতাসীন দল সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ঢাকাসহ অন্যত্র অন্তত ১০টি বড় সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছে।

আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, দুই দিনের সমাবেশ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে হওয়ায় জনগণের ভোগান্তি হবে না। দুটি জনসভাতেই আওয়ামী লীগ শক্তি ও জনপ্রিয়তা প্রদর্শন করবে।