আট মাসেই হাফেজ, বয়সও মাত্র আট

দারিদ্র্য যে সবাইকে আটকে রাখতে পারে না, আবারও তার প্রমাণ দিলো রিকশাচালকের ছেলে সাইমন ইসলাম। আট বছর বয়সের এ শিশু মাত্র আট মাসে পুরো কোরআন হিফজ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের উজানচর নুরে মদিনা সুন্নিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থী।

সাইমন ইসলাম

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাইমন বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাঞ্ছারামপুর গ্রামের বটতলী এলাকায় বসবাসকারী মো. আশরাফুল ইসলামের ছেলে। আশরাফুল পেশায় একজন রিকশাচালক। তার দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা ছিল, তার ছেলে হাফেজ হবে, আলেম হবে। সেই ইচ্ছা থেকেই তিনি ছেলেকে উজানচর নুরে মদিনা সুন্নিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় ভর্তি করে দেন।

সেখানেই মাত্র আট মাসে হিফজ শেষ করে সাইমন ইসলাম। তার এই কৃতিত্বে খুশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী ও তার মা-বাবা। পুরো উপজেলায় এত কম সময়ে হিফজ করার নজির এটাই প্রথম।

বাবা ও শিক্ষকের সঙ্গে সাইমন ইসলাম

শিক্ষক ও অভিভাবকরা জানান, সাইমনের ছোটবেলা থেকেই কোরআন হিফজের প্রতি ছিল প্রবল ইচ্ছা ও আকর্ষণ দেখা গেছে। আর সে কারণেই এত স্বল্প সময়ে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করতে পেরেছে সে।

সাইমনের বাবা আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমি নিজে পেশায় একজন রিকশাচালক। তবে আমার অনেক ইচ্ছা, আমার ছেলে কোরআনের হাফেজ হবে, আলেম হবে। আল্লাহর রহমতে মাত্র আট মাসে আমার ছেলে হাফেজ হয়েছে। উপস্থিত লোকজনের প্রতি দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন, যেন সে বড় হয়ে যেন ইসলামের খেদমত করতে পারে।

মাদরাসার অধ্যক্ষ নুর মুহাম্মদ বলেন, আমাদের হিফজ বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮০’র বেশি। তাদের মধ্যে সাইমন অনন্য একজন শিক্ষার্থী। সে যখন মাদরাসায় ভর্তি হয় তখন থেকেই পড়ার প্রতি বেশ মনোযোগী ছিল। তার পরিবার দরিদ্র হওয়া সত্ত্বেও তার মা-বাবার প্রবল ইচ্ছা ছিল ছেলেকে বড় একজন আলেম বানানোর। এখন সে হিফজ শেষ করেছে। আমরা প্রত্যাশা করি, সাইমনের মা-বাবার দোয়া যেন কবুল হয়। আমরাও সাইমনের তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।

মাদরাসার সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, এই মাদরাসায় সাইমন নামক ছেলেটি মাত্র আট মাসে পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়েছে। এটি আমাদের মাদরাসার জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। আমরা দোয়া করি, সে দ্বীনি শিক্ষায় নিজেকে আলোকিত করুক। বড় হয়ে ইসলামের খেদমত করুক।