জাতিসংঘকে অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে, নারীদের নেতৃত্বে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী

ইতিবাচক সিদ্বান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলতে নারীদের অবশ্যই নেতৃত্বের অবস্থানে থাকতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের প্রতিনিধি ডাইনিং রুমে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে ইউএনজিএ প্ল্যাটফর্ম অব উইমেন লিডারদের বার্ষিক সভায়ে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কর্মকান্ডকে অংশগ্রহণ থেকে নেতৃত্বে উন্নীত করতে হবে এবং জাতিসংঘকে অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। এটা দুঃখজনক যে জাতিসংঘের মহাসচিব পদে এখন পর্যন্ত কোনো নারীকে নিয়োগ করা হয়নি। সময় এসেছে, আমরা শিগগিরই একজনকে পাব।’

‘আমাদের অবশ্যই আমাদের অংশীদারিত্বের ভিত্তি বাড়াতে হবে যাতে সকল ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা একটি আদর্শ হয়ে ওঠে। নারীর অংশগ্রহণকে উচ্চতর পর্যায়ে এগিয়ে নিতে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে। নেতা হিসেবে, আমাদের তাদের সঙ্গে জড়িত থাকতে হবে এবং সাহসী উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করতে হবে.’ বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি দেশ আলাদা; তাদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গতিশীলতা রয়েছে। যখন সবাই ঐতিহাসিক এজেন্ডা ২০৩০ গ্রহণ করেছে তাই লিঙ্গ সমতা অর্জনে সবার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া উচিত।

"আমরা কোনো অবস্থাতেই সেই প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে যেতে পারি না। নারী নেত্রী হিসেবে, আমাদের দায়িত্ব আছে সব নারীর পাশে দাঁড়ানো এবং এমন উদাহরণ তৈরি করা যা অন্যদের পথ দেখাতে পারে। লিঙ্গ-সমান বিশ্ব অর্জনের জন্য আমাদের অবশ্যই আমাদের অবস্থান এবং শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তার সরকার মেয়েদের শিক্ষা এবং নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও বিনামূল্যে বই দেওয়ার পাশাপাশি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে মেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক স্তরে স্কুল শিক্ষকদের ৬০ শতাংশ নারী এবং দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে ৪ মিলিয়নেরও বেশি নারী কর্মরত রয়েছে।

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য রেয়াতি ঋণ নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত এবং তাদের অর্থায়নে সহায়তা করার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিগত পদক্ষেপ নিয়েছি।’

সরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে নারীদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হেয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ব্যবসায়িক উদ্যোগে নারীদের প্রচার ও সহায়তার জন্য জয়িতা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছে।

নারীরা এখন সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক, রাষ্ট্রদূত, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং বেসামরিক প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইত্যাদিতে উচ্চ পদ পাচ্ছেন। রাজনৈতিক বর্ণালীতে, সরকারের শীর্ষ থেকে সর্বনিম্ন স্তর পর্যন্ত নারীদের প্রতিনিধিত্ব করা হয়, তিনি অব্যাহত রেখেছিলেন।

তিনি বলেন, তারা আইসিটি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নারী ও মেয়েদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে চলমান বৈশ্বিক অর্থনীতি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন।